ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ চৈত্র ১৪৩১, ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৭ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

বাদাম বিক্রিতে সুখ খুঁজে নিয়েছেন সরাফত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৮, ২০১৯
বাদাম বিক্রিতে সুখ খুঁজে নিয়েছেন সরাফত বাদাম ভাজছেন সরাফত মিয়া। ছবি: বাংলানিউজ

মাদারীপুর: সরাফত মিয়া (৪০)। বাড়ি বাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী-মাওয়ার ব্যস্ততম নৌরুটে দেখে প্রায় ১৫ বছর আগে শিবচরে স্থায়ী হন তিনি। 

মাত্র ১২ বছর বয়সে বাদাম বিক্রির মাধ্যমে সংসারের হাল ধরেন সরাফত। স্টেশনে, বাসস্ট্যান্ডে, জনবহুল এলাকায় ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন তিনি।

বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে জীবনের অনেকটা সময় পার করেছেন।  

বর্তমানে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার ঢাকা-খুলনা সহাসড়কের পাশে পাঁচ্চর সোনার বাংলা প্লাজার সামনে ভ্যানগাড়িতে করে বাদাম, ছোলা, ডাবলী, সিমের বিচি, ভুট্টা ভাজা বিক্রি করেন। ভ্যানগাড়ির উপরে ছোট্ট চুলায় গরম বালুর মধ্যে বাদাম, ছোলা, ভুট্টা, সিমের বিচি, ডাবলি ভেজে পরিবেশন করে থাকেন। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তার ভ্রাম্যমাণ দোকান খোলা থাকে। ১৫-১৬শ টাকা আয় হয় প্রতিদিন।

সরাফত মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ ব্যবসা করে সুখে আছি। স্ত্রী, এক ছেলে আর দুই মেয়ে নিয়ে সুখেই কাটছে সংসার। ছেলে শিবচরের বন্দরখোলা গোরস্থান মাদ্রাসায় হাফিজি পড়ছে। আর দুই মেয়েকে স্থানীয় এক কিন্ডারগার্টেন স্কুল ভর্তি করিয়েছি। আমার স্বপ্ন ছেলেকে হাফিজি পড়ানো শেষ করে মাওলানা পড়াবো। মেয়েদেরও শিক্ষিত করবো।

বাদাম বিক্রি করছেন সরাফত মিয়া।  ছবি: বাংলানিউজ 

তিনি বলেন, ১২ বছর বয়স থেকে এই ব্যবসা করতেছি। সংসারে অভাব ছিল। আমরা ছোট থাকতেই বাবা মারা গেছেন। বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। লেখাপড়া করতে পারি নাই। সেই থেকে এই ব্যবসাতেই আছি। আগে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতাম। প্রথম দিকে শুধু বাদাম বেচতাম। এখন বাদামের সঙ্গে আরো কিছু রয়েছে। আমার চাহিদা কম। যা আয় হয় পরিবার নিয়ে বেশ ভালো আছি আল্লাহর রহমতে। শিবচরে আসার পর আয়-রোজগার বেড়েছে। এ কারণে শিবচর ছেড়ে যাইনি। এখানে সব মিলিয়ে সুখে আছি। এই ব্যবসা করে নিজ গ্রামে জায়গা-জমি কিনেছি। বাড়িও করেছি এই ব্যবসা করে। বছরে দুই/একবার দেশের বাড়ি বেড়াতে যাই।

সরাফত বলেন, ১০০ গ্রাম বাদাম, ছোলা, ভুট্টা, ডাবলি ২০ টাকা আর সিমের বিচি ভাজা ৪০ টাকা করে বিক্রি করি। সিমের বিচির দাম বেশি হলেও মানুষ ইদানিং সিমের বিচি ভাজা খেতে পছন্দ করছে। তবে বাদাম বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি।

বাদাম বিক্রি করতে করতে সরাফত মিয়া বলেন, চাহিদা সীমিত থাকলে আর নিয়মিত রোজগার করলে এবং যদি ঋণ না থাকে তাহলে সুখেই দিন কাটানো সম্ভব। আর কাজকে ছোট না ভেবে আপন করে নিলে ভালো উপার্জনও করা যায়। সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে ভালো মানুষ করতে পারলেই আমার সার্থকতা। এর বেশি কিছু চাই না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।