খুলনা: খুলনা বড় বাজারের হ্যান্ডলিং শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে চালের বাজার পাঁচ দিন ধরে অচল হয়ে পড়েছে। চাল ব্যবসায়ীদের সাথে হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের দীর্ঘ আলোচনা শেষে প্রতি ২৫ কেজির বস্তার জন্য এক টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নাকচ করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হ্যান্ডলিং শ্রমিকরা।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি রোববার (২ মার্চ) পর্যন্ত চলছে। এর ফলে রমজান শুরুর সাথে সাথেই খুলনা বড় বাজারে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হলো। যার ফল ভোগ করতে হবে সাধারণ ক্রেতাদের। কেননা বাজারে চাল কিনতে গিয়ে হ্যান্ডলিং শ্রমিক পাচ্ছেন না ক্রেতারা। অনেকে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি অন্য কাউকেও বস্তা বহন করতে দেননি এমন অভিযোগও রয়েছে। চাল ব্যবসায়ীদের সাথে শ্রমিকদের একাধিক বৈঠকেও অস্থিরতা কাটেনি।
রোববার (২ মার্চ) সকালে খুলনার সবচেয়ে বৃহৎ বাজারের (বড় বাজার) মুরাদ ট্রেডার্সের পরিচালক জিয়াউল হক মিলন বাংলানিউজকে বলেন, খুলনা হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ৫দিন ধরে ধর্মঘট পালন করছে তাতে খুলনা বড় বাজারে চালের বাজার অচল হয়ে গেছে। এতে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তি চরমে। বিশেষ করে খুলনার বাইরের মোকামের কাস্টমারদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। তাদের ট্রাক, ট্রলার ফাঁকা ফেরত যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আগে শ্রমিকদের ২৫ কেজি চালের বস্তায় আমদানিতে ৪ টাকা আর রফতানিতে ৫ টাকা দেয়া হতো মালিক ধান চাল বনিক সমিতি এখন ১টাকা করে বাড়িয়ে ৫ টাকা আর ৬ টাকা করে কিন্তু শ্রমিক ইউনিয়ন তাতেও রাজি না।
শনিবার (১ মার্চ) বেলা ১১টায় খুলনা ধান চাল বণিক সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সমিতির সভাপতি মুনীর আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মোহায়মেন কালু, খুলনা হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামসহ উভয় সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনার পর সমঝোতা না হওয়ায় কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা শেষ হয়। পরে সমিতি অফিসের নিচে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সাধারণ শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে ব্যবসায়ীদেও দেওয়া প্রস্তাব প্রতি বস্তায় এক টাকা করে মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা জানালে সাধারণ শ্রমিকরা ওই সিদ্ধান্ত মানেন না বলে জানান। এরপর সেখান থেকে শ্রমিকরা চলে গেলেও কর্মবিরতি অব্যাহত রাখার কথা জানান।
এদিকে, শনিবার বিকেল থেকে চাল ব্যবসায়ীরা দোকানে তাদের নতুন রেটচার্ট টানিয়ে দিয়েছেন। যাতে আগের মূল্যের চেয়ে বস্তাপ্রতি এক টাকা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নতুন মজুরিমূল্যে দেখা যায়, আমদানীর ক্ষেত্রে ক্ষেত্র বিশেষে আগে সাড়ে তিন টাকা থেকে সাড়ে চার টাকা মজুরির স্থলে সাড়ে চার টাকা থেকে সাড়ে পাঁচ টাকা হ্যান্ডলিং শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের কথা উল্লেখ রয়েছে। যেটি ১ রমজান হতে কার্যকর হবে। একইভাবে রপ্তানির ক্ষেত্রে সাড়ে চার টাকা থেকে ছয় টাকার স্থলে সাড়ে পাঁচ টাকা থেকে সাত টাকা মজুরি নির্ধারণের কথা উল্লেখ রয়েছে।
নতুন মজুরি তালিকায় লেখা রয়েছে খুলনা ধান চাল বণিক সমিতি ও খুলনা হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি-১২১২) এর সাথে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনান্তে সর্বশেষ ব্যবসায়ীদের প্রস্তাবিত শ্রমিক মজুরি চার্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
এমআরএম