ঢাকা, সোমবার, ২০ মাঘ ১৪৩১, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ইতালিযাত্রা: সাগরে ডুবে রাজৈরের ১০ যুবকের প্রাণহানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫
ইতালিযাত্রা: সাগরে ডুবে রাজৈরের ১০ যুবকের প্রাণহানি

মাদারীপুর: অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় সম্প্রতি নৌকাডুবিতে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ১০ জনের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায়।

এরা হলেন- রাজৈর উপজেলার পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের টিটু হাওলাদার, গোবিন্দপুরের বাসিন্দা আবুল বাশার আকন, ইনসান শেখ ও আশিষ কীর্তনীয়া, সুন্দিকুড়ি গ্রামের নীল রতন বাড়ৈ, সাগর বাড়ৈ, সাগর বিশ্বাস, বৌলগ্রামের অমল কীত্তনীয়া ও অনুপ সরদার শাখারপাড়ের সজিব মোল্লা ও সাদবাড়িয়ার রাজীব। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতদের বয়স ২০-৩০ বছরের মধ্যে। তারা সবাই দালারের খপ্পরে পড়েছিলেন।

জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি ইতালির উদ্দেশ্যে রাজৈর পৌরসভার পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রাম থেকে রওনা দেন টিটু হাওলাদার। তার বাবা হাসান হাওলাদার একজন চা বিক্রেতা। টিটুর সঙ্গে বাড়ি ছাড়েন মামা আবুল বাশার আকন। তার বাড়ি গোবিন্দপুর। গত ২৪ জানুয়ারি লিবিয়া থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যাত্রা শুরু হয় তাদের। পথে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে তারা নিহত হন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে মামা-ভাগ্নের বাড়িতে তাদের মৃত্যুর খবর পৌঁছায়।

নিহত অন্যান্যদের গল্পটাও প্রায় একই রকম। তারা সবাই উন্নত জীবনের আশায় ইতালির উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। গ্রামের ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে ইতালি যেতে চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিলেন তারা। গত বৃহস্পতিবার ভূমধ্যসাগরে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়। স্বজনরা তাদের মরদেহ ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আর্জি জানিয়েছেন। পাশাপাশি দালাল হিসেবে পরিচিত উপজেলার হরিদাসদি গ্রামের স্বপন মাতুব্বর, মজুমদারকান্দি গ্রামের মনির হাওলাদার এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আলীপুরের রফিকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।

দালালদের বিষয়ে কথা হলে নিহত আবুল বাশারের বাবা আক্কাস আলী আকন জানান, মনির হাওলাদার ও স্বপন মজুমদার তাদের কাছ থেকে ২৮ লাখ নিয়েছেন। কিন্তু তারা বাশারকে ইতালি পাঠাননি। বরং লিবিয়া নিয়ে নৌকায় তুলে হত্যা করেছে। তিনি মনির ও স্বপনের শাস্তি দাবি করেছেন।

টিটু হাওলাদারের চাচাতো ভাই রেজাউল হাওলাদার বলেন, ইতালি পাঠানোর কথা বলে দালালরা তাদের স্বজনদের হত্যা করেছে। তিনি তার ভাইসহ নিহত সবার মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন।

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ খান বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে রাজৈর উপজেলার ১০ যুবক ভূমধ্যসাগরে ডুবে নিহত হয়েছেন বলে জেনেছি। নিহতদের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ্ মোহাম্মদ সজীব বলেন, নিহতদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দূতাবাসের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণে এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।