ঢাকা, রবিবার, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ডিআরইউর সামনে ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৫
ডিআরইউর সামনে ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ

ঢাকা: অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী বকেয়া বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পরিশোধ এবং সাংবাদিক কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন পত্রিকাটির সাংবাদিক কর্মচারীরা।  

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

 

সমাবেশ থেকে অবিলম্বে ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সব দেনা-পাওনা পরিশোধের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।  

২০ জানুয়ারি হঠাৎ একটি নোটিশ টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরোনো এই সংবাদপত্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নোটিশে বলা হয়, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা চলতি বছরের ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।

পরদিন ২১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। অন্যথায় মালিকপক্ষের অফিস ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সেই অনুয়ায়ী ২৩ জানুয়ারি কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। ভোরের কাগজ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।

সেদিন ভোরের কাগজ খুলে দেওয়া না হলে পত্রিকার মালিক সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে তার অন্যান্য ব্যবসা-বাণিজ্য ‘গুটিয়ে ফেলতে হবে’ বলেও সতর্ক করেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।

প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া ও বকেয়া পরিশোধের দাবিতে সংবাদকর্মীদের নানা কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় আজ ডিআরইউর সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়।

ডিআরইউর সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, কোনো রকম নোটিশ ছাড়া হঠাৎ পত্রিকা বন্ধ করা মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে কথায় কথায় পত্রিকা বন্ধের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।

ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের দাবি দ্রুত মেনে নিয়ে সব দেনা-পাওনা পরিশোধ করার জন্য মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তা নাহলে আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন না। যতক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ডিআরইউসহ সব সাংবাদিক সংগঠন আমরা তাদের পাশে আছি এবং থাকবো।
 
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ডিআরইউর সহসভাপতি গাজী আনোয়ার, যুগ্ম সম্পাদক নাদিয়া শারমিন, তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ডি এম অমর।

সমাবেশে সাংস্কৃতিক সম্পাদক এমদাদ খান, কল্যাণ সম্পাদক রফিক মৃধা, ডিআরইউর সাবেক কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলুসহ সাংবাদিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন, সম্পাদকীয় বিভাগের ইনচার্জ সালেক নাসির উদ্দিন, সার্কুলেশন বিভাগের ইনচার্জ তসলিম চৌধুরী, বিজ্ঞাপন বিভাগের ডেস্ক নির্বাহী মো. আক্কাছ আলী, কম্পিউটার বিভাগের ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়া, উৎপাদন বিভাগের ইনচার্জ শরণ হাওলাদার, সিনিয়র রিপোর্টার এস এম মিজান ও সম্পাদনা সহকারি বিভাগের প্রধান মো. ইবরাহিম প্রমুখ।

এছাড়া কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ভোরের কাগজের যুগ্ম বার্তা সম্পাদক হুমায়ুন হাশিম, স্পোর্টস ইনচার্জ শামসুজ্জামান শামস, বিজ্ঞাপন বিভাগের ডেপুটি ম্যানজার নুর মোহাম্মদ স্বপন প্রমুখ।  

মানববন্ধন ও সমাবেশে ভোরের কাগজের সব বিভাগের সাংবাদিক-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।  

ভোরের কাগজ অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে, এমন ঘোষণা দিয়ে সরকার থেকে ৯শ টাকা কলাম ইঞ্চি বিজ্ঞাপনসহ সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। অথচ সাংবাদিক-কর্মচারীদের ওয়েজবোর্ডের বেতন স্কেলের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। এমনকি কোনো নিয়োগপত্র দেয়নি।

কর্মসূচি থেকে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী সব বকেয়া বেতন-ভাতা ও সার্ভিস বেনিফিট দিতে হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৫
টিএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।