ঢাকা, সোমবার, ২৯ পৌষ ১৪৩১, ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

৫ মাস ধরে অন্ধকারে মনসুর আলী স্টেশন

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
৫ মাস ধরে অন্ধকারে মনসুর আলী স্টেশন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশন।

সিরাজগঞ্জ: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী রেলওয়ে স্টেশন। ঘটনার ৫ মাস পার হলেও সংস্কার হয়নি স্টেশনটি।

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় জেলার গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনটিতে সন্ধ্যা নামলেই ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।  

এদিকে বাজেট না থাকায় স্টেশনটি সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে রেলওয়ে বিভাগ।  

সম্প্রতি ঢাকা-ঈশ্বরদী রেল সড়কের সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সদানন্দপুর এলাকায় শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন ঘুরে দেখা যায়- স্টেশনটির কাউন্টার ও অফিস রুমের ভেতরের ফার্নিচার, কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ সব আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। যাত্রীদের বিশ্রামাগারটি পুড়ে ধংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বৈদ্যুতিক মিটার ভাঙচুর করে তারগুলো ছিন্ন করা হয়েছে। ফলে প্লাটফরমসহ পুরো স্টেশনে কোনো প্রকার বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে না। সন্ধ্যার পর থেকেই ভুতুড়ে অন্ধকার নেমে আসে স্টেশনটিতে।  

কথা হয়, সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রী জুয়েল রানা, মাসুম হোসেন, আবিদা খানম, সোনালী রায়সহ অনেকের সঙ্গে। তারা বলেন, আমরা এই স্টেশন দিয়েই ঢাকা, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রেনে যাতায়াত করি। স্টেশনে আলো না থাকায় রাতে গাড়ি থেকে নেমেই আতঙ্ক নিয়ে দ্রুত স্টেশন ত্যাগ করতে হয়। এছাড়াও রাতে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়।  

সদানন্দপুর শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশনের বুকিং সহকারী (ইনচার্জ) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আন্দোলনের সময় স্টেশনটা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাউন্টার, অফিসরুম ভাঙচুর ও যাত্রীদের বিশ্রামাগার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যুতের মিটার ভাঙচুর ও সংযোগের তার ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে।
প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গত ২৩ নভেম্বর প্রথম শ্রেণির বিশ্রামাগারটিতে ভ্রাম্যমাণ কাউন্টার স্থাপন করে স্টেশনটির কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। নতুন মিটার স্থাপন করে ভ্রাম্যমাণ কাউন্টারটি পরিচালনা করছি। তবে পুরো প্লাটফর্ম অন্ধকারেই রয়েছে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালুর জন্য আবেদন করেছি।  

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আমি জানতে পেরেছি ৫ মাসেও সদানন্দপুর স্টেশনটিতে বৈদুত্যিক সংযোগ না দেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। আমরা রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাবো দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে স্টেশনটিকে আলোকিত করা হোক।  

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী রিফাত শাকিল বলেন, আমাদের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজ করা হবে। সেখানে তো স্ট্রাকচারেই সমস্যা। ওখানে টেন্ডার করে কাজ করতে হবে। স্ট্রাকচার ঠিক না হলে আমরা কাজ করতে পারছি না। আমাদের দিক থেকে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ রেডি করে রেখেছি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের কাজের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের প্রসেস শুরু হলে আমরাও এক সঙ্গেই শুরু করবো।  

এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নূর মোহাম্মদ বলেন, স্টেশনটি সংস্কারের জন্য টেন্ডারের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে বাজেট না থাকায় টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যেতে পারছি না। অর্থ মন্ত্রণালয় কোনো প্রকার টাকাই আমাদের দিচ্ছে না। ফলে কতদিনে স্টেশনটি সংস্কার করতে পারবো সেটা বলতে পারছি না।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০২৫
আরএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।