ঢাকা, শনিবার, ২৭ পৌষ ১৪৩১, ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

‌‘ফ্যাসিস্ট শক্তি জিতলে ২ লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো’

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
‌‘ফ্যাসিস্ট শক্তি জিতলে ২ লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো’ কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, যদি ফ্যাসিস্ট শক্তি জিততো, তাহলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো। আর তখন ন্যারেটিভ হতো, কিছু ‘দুর্বৃত্ত’ দেশজুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সাংবাদিক সমিতি আয়োজিত ‘জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ও পরবর্তী প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই বিপ্লবে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, যদি ফ্যাসিস্ট শক্তি জয়ী হতো, তাহলে দুই লাখ মানুষকে জেলে যেতে হতো। আর তখন ন্যারেটিভ হতো যে, কিছু ‘দুর্বৃত্ত’ দেশজুড়ে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জুলাইয়ের মতো মহৎ সময় আমাদের জন্য আগে আর কোনো বার আসেনি। আমাদের সাংবাদিকরা ১৯৭১ এর যুদ্ধ কতটুকু দেখেছে আমি জানি না। আমাদের এক কোটি লোক শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। এদের মানবেতর জীবন ও দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে খুব কমই লেখা পাওয়া যায়। এসব নিয়ে আমরা স্টোরি করিনি। আমাদের রাইটিংয়ের অভ্যাসটা খুব কম। লেখার অভ্যাস বাড়াতে হবে।

প্রেস সচিব বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে বিশ্বের ইতিহাসে বড় ধরনের লুটপাট হয়েছে বাংলাদেশে। চোরতন্ত্র তৈরি করেছিলেন শেখ হাসিনা। বড় বড় কোম্পানিকে কাজ পাইয়ে দেওয়া ছিল তার কাজ। সেই সময় বিদেশে টাকা পাচারকারীরা এখন সেই টাকায় প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন। তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চান যে, এখানে এখন মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটেছে, কোনো গণঅভ্যুত্থান হয়নি। পরাজিত শক্তি আবার আপনাদের জঙ্গি বানাতে চায়।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, শেখ হাসিনা বৃহত্তম জেলখানা, বৃহত্তম গোরস্থান তৈরি করেছিলেন। এতেই বোঝা উচিত ছিল, তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল। শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী তারা ফ্যাসিবাদের এক ধরনের সহযোগী ছিল। ফ্যাসিবাদ কোনো প্রতিষ্ঠান নয়, ফ্যাসিবাদ হলো জমিদারি ও কর্তৃত্ব। আমরা সেই জমিদারি ও কর্তৃত্বের অবসান করতে চাই। আমাদের ভিশনটা (লক্ষ্য) হবে জাতীয় ও জনগোষ্ঠীর স্বার্থকেন্দ্রিক।

তিনি বলেন, ২০০৬-০৭ সালের জরুরি অবস্থাকে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারেনি। এটা ছিল মাইনাস টু থিওরি। আজকেও আন্দোলনের অংশীদাররা কাউকে মাইনাস করতে চায়, তাদেরও একই অবস্থা হবে।

অনুষ্ঠানে জবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জবির উপাচার্য মো. রেজাউল করিম।  

তিনি বলেন, স্বৈরাচার ইতিহাস আমরা যা দেখেছি, তা বর্ণনা করতে গেলে কয়েক ঘণ্টা লেগে যাবে। স্বৈরাচার যখন কেন একটা ছেলেকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তখন বলা হতো, ছাত্রদল অথবা শিবির মেরেছে। তাহলে তার পাশে কাউকে দেখা যেতো না।

জবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন কিমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন ও জবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন।  

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জবি সাংবাদিক সমিতির সহ-সভাপতি আসাদুল ইসলাম।  

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের শিক্ষক, রাজনৈতিক দলের নেতারা, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৫
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।