ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে আপ্লুত, শেখ হাসিনাকে ‘মা’ ডেকে দিলেন দাওয়াত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে আপ্লুত, শেখ হাসিনাকে ‘মা’ ডেকে দিলেন দাওয়াত

লালমনিরহাট: অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘরে অসহায় জীবন কাটছিল সাহেরন বেওয়ার। সেই বৃদ্ধা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাকা ঘর।

এই আনন্দের যেন সীমা নেই।  

জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত সাহেরন বেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মা’ ডেকে লালমনিরহাট সফরের দাওয়াত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হামার এত্তি আইসেন মা, তোমরার দাওয়াত থাকিল। হামরা তোমাকে বুকে তুলে নিমো মা, আইসেন হামার এত্তি’।

মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পঞ্চম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৮ হাজার ৫৬৬ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

এ সময় লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা মহিষামুড়ি আশ্রয়ণের সুফলভোগীদের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সময়ই ঘর পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন সাহেরন।  

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, অন্যের জমিতে বসবাস করেই জীবন কেটেছে। এখন জমিসহ পাকা বাড়ি পেয়েছি। বাড়ির উঠানে শাক-সবজি ফলমূলের গাছ লাগিয়েছি। হাঁস-মুরগি পালন করছি। অনেক সুখে আছি এখন।  

এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীকে তার বাড়িতে দাওয়াত করেন সাহেরণ। তিনি ওষুধ খাওয়ার জন্য সহায়তা প্রার্থনা করলে তাৎক্ষণিক প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ওষুধের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দেন।

এরপর বৃদ্ধা সাহেরন বেওয়া পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে কিছু আয়াত পাঠ করে প্রধানমন্ত্রীর জন্য মোনাজাত শুরু করেন। এ সময় মাইক্রোফোনটি কেড়ে নেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জহির ইমাম।  

এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী বলে ওঠেন, ‘এটা কী? একজন মানুষ মোনাজাত করছেন, আর হাত থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। হোয়াট ইজ দিস?’

এরপর ওই বৃদ্ধার কাছে মাইক্রোফোনটি আবার ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করে নিজের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীকে আবারও দাওয়াত দিয়ে কথা শেষ করেন।

অনুষ্ঠানে আরেক সুফলভোগী ঝালমুড়ি বিক্রেতা বাবু মিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের ঘর নিয়ে নিজের লেখা একটি গান পরিবেশন করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী গান শুনে করতালি দিয়ে তাকে উৎসাহ দেন।

জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আশ্রয়ণের ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীরা রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ভাওয়াই গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন। প্রধানমন্ত্রী তা উপভোগ করেন।

লালমনিরহাটের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় লালমনিরহাট অবহেলিত ছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে তিস্তা ও ধরলায় একাধিক সেতু নির্মাণ করেছি। মহাকাশ গবেষণার জন্য অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করেছি এ জেলায়। জেলার উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচির কাজ চলমান।  

ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিটমহল বিনিময়ের চুক্তি করেছেন। তৎপরবর্তী এরশাদ ও খালেদা জিয়া তা করতে পারেনি। অথচ আমরা ক্ষমতায় এসে দীর্ঘ আলোচনা শেষে ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন করেছি। এক সময় এসব ছিটমহলের বাসিন্দাদের কোনো পরিচয় ছিল না। আমরা সে ব্যবস্থাও করেছি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালমনিরহাট-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান, লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।