ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে ৪ চিকিৎসকের নামে মামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৪
ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে ৪ চিকিৎসকের নামে মামলা

মাগুরা: মাগুরায় ভুল চিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে চার চিকিৎসকের নামে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (৮ এপ্রিল) মাগুরা সদর আমলী আদালতে এ মামলা করেছেন ওই নারীর বাবা অ্যাডভোকেট মিজানুর ফিরোজ।

 

মামলায় মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. শফিউর রহমান, তার স্ত্রী ডা. জাফরিন আক্তার, একই হাসপাতালের ডা. অরুণ কান্তি ঘোষ এবং ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. অনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে শায়লা রহমান সেতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে পরীক্ষা দিয়েছেন। শায়লা রহমানের সন্তান প্রসবের সময় হলে তাকে ডা. জাফরিন আক্তারের পরামর্শ মতে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মাগুরা হাজী আব্দুল হামিদ সড়কে লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করেন বাবা মিজানুর। সেখানে ওই রাতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় শায়লা রহমান। কিন্তু এই অস্ত্রোপচারের সময় শায়লার পেটের খাদ্যনালি কেটে ফেলায় তিনি জটিল অবস্থায় পড়েন।  

রোগীর রক্তক্ষরণ শুরু হলে ডা. জাফরিন আক্তার তার স্বামী ডা. শফিউর রহমানকে মোবাইল ফোনে কল দেন। শফিউর ভোররাতে ওই ক্লিনিকে এলে তিনি, তার স্ত্রী জাফরিন ও ডা. অরুণ কান্তি ঘোষ রোগীর তলপেটসহ একাধিক স্থানে পুনরায় অস্ত্রোপচার চালান। এ সময় আরও রক্তক্ষরণ হলে বাদীপক্ষ দিয়ে ১১ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে রোগীর শরীরের দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ডা. শফিউর রহমান রোগীকে শুক্রবার (৫ এপ্রিল) সকাল ৭টার দিকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে পুনরায় অচেতন করে চিকিৎসার চেষ্টা করেন। এ সময় রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে উল্লিখিত চিকিৎসকরা জানান, ভুল চিকিৎসার কারণে রোগীর শরীরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ কারণে তাকে ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠাতে হবে।  

সে মোতাবেক বাদীপক্ষ রোগীকে ঢাকা পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে আইসিইউতে কিছুক্ষণ রাখার পর রোগীর মৃত্যু হয়। বাদী মনে করেন, উল্লিখিত চিকিৎসকদের সঙ্গে ঢাকার পপুলার হাসপাতালের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে আইনগত ব্যবস্থা এড়াতে ওই তিন চিকিৎসক পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অনোয়ার হোসেনকে দিয়ে কৌশলে মৃত্যুসনদ নেওয়ার জন্য রোগীকে সেখানে স্থানান্তর করতে বলেন। তাই ডা. আনোয়ার হোসেনকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

মাগুরার সদর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ন কবীর অভিযোগটি আমলে নিয়েছেন। বিষয়টি আদেশের অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছেন বাদীর আইনজীবী।

অভিযোগের বিষয়ে ডা. শফিউর রহমানকে ফোন করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে মাগুরা জেলা সিভিল সার্জন শামীম কবি জানান, সিজার করার সময় এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে কিনা তেমন কোনো কিছু জানা নেই। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তদন্ত চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২৪
এইচএ/এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।