ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘কর্মচারীদের কীভাবে ঈদ যাবে আল্লাহ জানে’

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
‘কর্মচারীদের কীভাবে ঈদ যাবে আল্লাহ জানে’

ঢাকা: সবাই ভালো-মন্দ মিলিয়ে সবার সাথে ঈদ করবে। এখন যখন ঈদ করার সময় আসছে, তখনই সমস্যাটা হয়ে গেছে।

যখন কেনাকাটা, বেচাকেনা বাড়বে, ওই সময়ে আগুনটা লেগে গেছে। সবার কেমন যেনো মন ভেঙ্গে গেছে। সবার যা-তা, যার আছে, তার তো আছে। যার গেছে, তারও কিছু থাকে, ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে। কিন্তু যারা বঙ্গবাজার মার্কেটে কাজ করে খায়, মাস শেষে তো তারা বেতন না পেলে তাদের কি উপায় হবে? তারা কীভাবে চলবে, কীভাবে তাদের ঈদ কাটবে? কীভাবে তাদের সংসার চলবে সেটা আল্লাহ্ই ভালো জানেন।

বুধবার (০৬ এপ্রিল) আক্ষেপের সুরে চোখে একরাশ হতাশা নিয়ে বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন রাজধানীর বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত একটি দোকানের কর্মচারী মো. সুমন।

সুমনের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। তিনি বঙ্গবাজারের এনেক্সকো মার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানের বেতনভূক্ত কর্মচারী। বুধবার রাতে এনেক্সকো মার্কেটের সামনে তার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের।

অন্য আরও অনেক কর্মচারীর মতো কপাল পুড়েছে সুমনেরও। নিজের কর্ম হারিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেছেন তিনি। কথায় যেনো সেই আক্ষেপই ফুটে উঠছিল বারবার।  

বাংলানিউজকে তিনি আরও বলেন, সবাই তো সিজন শেষে ঈদ বোনাসের আশা করে রেখেছে। ঈদ বোনাস পাবে বা কেনাকাটা করবে, ভালোমন্দ কিছু খাবে। কিছুই হলো না। সবার আশাই মাটি হয়ে গেলো।

কাপড়ভর্তি অনেকগুলো সাদা বস্তার উপর বসেছিলেন তিনি। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের মালামাল সেগুলো। তিনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, সেটিও পুড়ে গেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সুমন বলেন, ভাই দোকান পুড়ে যাক বা থাক সেটা তো আছেই। যে পণ্যগুলো রয়ে গেলো (বস্তার দিকে ইঙ্গিত করে) যেখানে বিক্রি করব সে জায়গাটাই তো নেই আর৷

সুমনের সঙ্গে থাকা ভিন্ন-ভিন্ন দোকানের আরও অন্তত ৩ জন কর্মচারীর কণ্ঠেও ছিল হতাশা, দু:খের এমন গল্প। আদতে গল্প নয়, নির্মম বাস্তবতা।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি ও বঙ্গবাজার শপিং কমপ্লেক্সের দোকান মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গবাজারের জনপ্রিয় খুচরা ও পাইকারি কাপড়ের সাতটি মার্কেটে আগুনের ঘটনায় অন্তত ১ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৫ হাজার দোকান পুড়েছে। সেই হিসেবে আনুমানিক ১০ হাজারের বেশি কর্মচারী নিজের কাজ হারিয়েছেন বা না হারালেও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

সেখানকার নয়টি মার্কেটের মধ্যে আগুনে পুড়েছে গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, মহানগর কমপ্লেক্স, আদর্শ মার্কেট, এনেক্সকো টাওয়ার, বাংলাদেশ সুপার মার্কেট, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেট এবং বঙ্গ হোমিও মার্কেট।

ক্ষতিগ্রস্ত এসব মার্কেটের ব্যবসায়ীদের প্রধানমন্ত্রী সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই সঙ্গে সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকেও অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ সিটির মেয়র। এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন বিদ্যানন্দের মতো বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। সুমনের মত কর্মচারীদের চাওয়া ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি কর্ম হারানো এসব কর্মচারীদের সহায়তায় এগিয়ে আসবেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৩
এমকে/এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।