জীবন-সংসার-দাম্পত্যের পূর্ণতা দিতে ভালোবাসার বার্তা নিয়ে আসে আমাদের ছোট্ট সন্তান। সেই আদরের সন্তানের জন্য সব সময় নিরাপদ বাসযোগ্য পরিবেশ চাই আমরা।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক বিষয়ে শিশুদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় থাকতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও, অনেক ঘটনা শিশুদের সঙ্গে ঘটে যেতে পারে, যার জন্য হয়ত শারীরিক-মানসিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে তার জীবনে।
এজন্য প্রথমেই সচেতন হতে হবে মা-বাবাকে। সন্তান যখন খুব ছোট তখন থেকেই তার প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে, যেন সে কোনোভাবেই নিপীড়নের শিকার না হয়।
সন্তানদেরকে সঠিক পথে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখতে বাবা মাকে যা করতে হবে
গুড টাচ-ব্যাড টাচ
একটি শিশুকে সবাই আদর করবে-ভালোবাসবে, এটা খুব স্বাভাবিক। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে সেই ছোঁয়া যেন বিকৃত না হয়। যখন একটু বুঝতে শিখবে, তখনই সন্তানকে বুঝিয়ে দিন, তার শরীরের বিশেষ কিছু জায়গায় কেউ যেন টাচ করতে না পারে। কেউ কোনো অশালীন আচরণ করলে সে যেন আপনাদের সঙ্গে বলে দেয়। আর এসব শিশু-কিশোরদের বোঝাতে হলে প্রথমেই মা-বাবাকে সন্তানের বন্ধু হতে হবে।
খাবার টেবিলে একসঙ্গে
পরিবারের সবাই এখন ব্যস্ত। ঠিক ঘড়ির সময় ধরে খাবার টেবিলে তিনবেলা হাজির হওয়া সত্যি সম্ভব নয়। তবে ইচ্ছা থাকলে এক বেলা তো অবশ্যই সম্ভব। পরিবারের সবাই মিলে রাতের খাবার একসঙ্গে খাওয়া বাধ্যতামূলক করে দিন। খাওয়ার সময় টিভি না দেখে বা গম্ভীর মুখে তাড়াহুড়ো করে খাওয়া শেষ না করে, সারাদিন কে কী করেছে গল্পে গল্পে জেনে নিন।
মাসে অন্তত একদিন
সারা মাসের একটি দিন ফ্রি রাখুন। এই দিনে কি করা যায় তা নিয়ে সবাই মিলে পরিকল্পনা করুন। সন্তানকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরতে যান। তার পছন্দের কোনো খাবার খান একসঙ্গে কেনাকাটা করুন। নিয়মিত এটা করতে থাকলে ফ্যামিলি বন্ডিং আরও দৃঢ় হবে। কিছুদিন পরে দেখবেন সে এই বিশেষ দিনটির জন্য অপেক্ষা করছে।
কী করছে তারা
সারাদিন বাবা মা দুজনকেই বাইরে থাকতে হয়। সন্তান যখন বাড়িতে একা থাকছে তারা কী করছে, বন্ধুদের সঙ্গে কী ধরনের কথা হচ্ছে অথবা ইন্টারনেটে কোন সাইটগুলোতে সে বেশি সময় ব্যয় করছে তার খোঁজ রাখুন। মাঝে মাঝে সন্তানের বন্ধুদের পরিবারসহ বাড়িতে ডাকুন। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। তাতে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে আপনার সন্তানটি কাদের সঙ্গে মিশছে।
আমরা অনেক সময়ই শুধু মেয়ে শিশুর জন্যই বেশি চিন্তা করি। তার সুরক্ষার চেষ্টায় থাকি। কিন্তু ছেলে শিশুর ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে যৌন নিপীড়ন। এজন্য সব সন্তানের জন্য সচেতন থেকে তাদের সুস্থ-সুন্দরভাবে নিরাপদে গড়ে ওঠার পথ তৈরি করে দিন।
মনে রাখতে হবে, শারীরিক, মানসিক বা যৌন নির্যাতন থেকে শিশুরা পরবর্তীতে বিষণ্নতা, হীনমন্যতায় ভোগার পাশাপাশি আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২৫
এসআইএস