১৯৯৮ সালে শেষ বার দিল্লির মসনদে ছিল বিজেপি (ভারতীয় জনতা পার্টি)। দিল্লিতে দলটির শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ।
আভাস মিলেছে, ২৭ বছর পর দেশটির রাজধানীতে প্রত্যাবর্তনের পথে বিজেপি। বুথফেরত জরিপের পরিসংখ্যান সেই সুবাস পাচ্ছে পদ্ম প্রতীকের দল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি বিধানসভার ভোটগ্রহণ হয়। আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সেই ভোটের গণনা শেষের পথে।
আজই চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করার কথা নির্বাচন কমিশনের। তার আগেই বিজেপির দিল্লি জয়ের সুখবর বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।
দিল্লির বিধানসভায় মোট আসনসংখ্যা ৭০টি। সরকার গঠন করতে হলে যে কোনো দল বা জোটকে অন্তত ৩৬টি আসনে জয়ী হতে হবে।
এ পর্যন্ত বুথফেরত জরিপের ফলাফল বলছে, প্রায় ৪১টি আসনে এগিয়ে আছেন বিজেপির প্রার্থীরা। বাকি ২৯টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে বর্তমানে ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি (এএপি/আপ) এবং ১টিতে এগিয়ে আছেন কংগ্রেসের প্রার্থী।
দিল্লির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মার্লেনা এবং মনীষ সিসোদিয়া, গৌতম ভরদ্বাজসহ আপের বেশ কয়েকজন প্রথমসারির নেতা তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিজেপি প্রার্থীদের থেকে পিছিয়ে আছেন। এমনকি দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিজেও গণনার প্রথম পর্যায়ে পিছিয়ে পড়েন। পঞ্চম রাউন্ডের গণনা শেষে নয়াদিল্লি আসনে প্রবেশ সিংহের চেয়ে ২২৫ ভোটে পিছিয়ে পড়েন কেজরিওয়াল।
দিল্লিতে বিজেপি ক্ষমতায় ফিরলে কে হবেন পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? শনিবার দুপুরে সেই প্রশ্নের মুখোমুখি হলে দিল্লি বিজেপির প্রেসিডেন্ট বীরেন্দ্র সচদেবা বলেন, ‘দিল্লির মানুষ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বকে দেখে ভোট দিয়েছেন। তাদের যন্ত্রণা আমরা উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিজেপি থেকেই কেউ পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন। তবে কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, সম্পূর্ণ ফলাফল দেখে দল সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ’
এবারের বিধানসভায় কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি লড়েছে ৭০টি আসনে। বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৬৮ আসনে। দুটি আসন তারা ছেড়েছে জেডিইউ এবং এলজেপি (রামবিলাস)-কে।
দিল্লিতে গেরুয়া শিবিরের জয়ের আভাস অনেকটা দিয়ে রেখেছিলেন ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী।
ডিডাব্লিউকে তিনি বলেছিলেন, ‘বুথফেরত সমীক্ষা সবসময় সঠিক হয় না। যদি এক্ষত্রে মিলে যায় তাহলে বিজেপির জয়ের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ কাজ করবে। যে দল দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতায় আসে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে মানুষ ক্ষমা করে না। কেজরিওয়ালসহ আপের একাধিক সদস্য, এমনকি মন্ত্রিসভার সদস্যদের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ মানুষ ভাল চোখে নেয়নি। ’
২০২০ সালের নির্বাচনে আপের দখলে ছিল ৬২টি সিট। প্রায় ৫৩ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে বিজেপি কে রীতিমতো পর্যুদস্ত করে তারা। কংগ্রেস খাতা খুলতে পারেনি। এই নির্বাচনের আগে আপের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আপ নেতাদের দুর্নীতির অভিযোগ জনতার কানে পৌঁছে দিয়েছেন বিজেপি। জেলে গেছেন অরবিন্দ কেজরিওয়ালসহ একাধিক আপ নেতা। ভোটবাক্সে তার কী প্রভাব পড়ে সেটাই এখন দেখার।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৫
এসএএইচ