রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবার পাঁচটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের সুবিধার জন্য এই পদ্ধতি চালু করা হলেও কারও কারও জন্য তা চরম ভোগান্তিতে পরিণত হয়েছে।
অনেক শিক্ষার্থী চূড়ান্ত আবেদনে যেখানে কেন্দ্র চয়েজ দিয়েছেন, সেখানে আসেনি। কেন্দ্র এসেছে দূরবর্তী স্থানে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।
চাহিদামতো কেন্দ্র না আসা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন কাজের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তারা বলছেন, রংপুরের শিক্ষার্থীদের এখন চট্টগ্রাম গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে, রাজশাহীর শিক্ষার্থীদের যেতে হবে খুলনা! এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বেন নিম্নবিত্ত শিক্ষার্থীরা। যাদের আর্থিক সামর্থ্য কম, তাদের অনেকেই হয়তো পরীক্ষা দিতেই পারবেন না। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য দূরবর্তী কেন্দ্রে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী শুধুমাত্র এই অব্যবস্থাপনার কারণে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। যেখানে সুবিধা হওয়ার কথা, সেখানে উল্টো অসুবিধা তৈরি করা হচ্ছে। পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তাদের বাড়ি জামালপুর। তার ছোটভাই রাজশাহীতে সেন্টার চয়েজ দিয়েছিলেন। কিন্তু অ্যাডমিট কার্ডে তার সেন্টার উল্লেখ করা হয়েছে চট্টগ্রাম।
স্বজন রায় নামে রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, তার ভাতিজা সেন্টার দিয়েছিলের রংপুরে। কিন্তু তার অ্যাডমিট কার্ডে এসেছে চট্টগ্রাম। ঠাকুরগাঁও থেকে এখন চট্টগ্রাম যাওয়া ভোগান্তির থেকেও বড় কিছু।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ভর্তি কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে শুধুমাত্র বিভাগীয় শহরের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে। এক্ষেত্রে সমস্যা যেটা হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়ার আসন কম, সেখানে বেশি আবেদন করেছে। আবার যেখানে সিট বেশি, সেখানে কম আবেদন করেছে।
আর তাই মেরিট অনুসারে সিট প্ল্যান করা হয়েছে। ফলে এই সমস্যা হয়েছে। তাছাড়া এক শিফটে পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে এ মুহূর্তে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া খুবই কঠিন। পরবর্তীতে বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হবে। এছাড়া বর্তমান করণীয় নিয়েও সভা আহ্বান করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন বলেন, বিষয়টি জানার পরপরই আইসিটি সেন্টারের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে কীভাবে উদ্ভূত সমস্যাটা সমাধান করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ করছি।
আইসিটি সেন্টারের তথ্যমতে, এ বছর এ, বি, সি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
‘এ’ ইউনিটে ৯৬ হাজার ১৬২, ‘বি’ ইউনিটে ৪২ হাজার ৪৩৩, ‘সি’ ইউনিটে ৯৮ হাজার ৮২০ জন চূড়ান্ত আবেদন করেছেন। তবে অভিন্ন পরীক্ষার্থী সংখ্যা দুই লাখ ৩০ হাজার ৯৪ জন। পাঁচ বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে আটটি।
এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ হাজার ৭০০টি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্রণী স্কুলে শুধু ‘সি’ ইউনিটের জন্য অতিরিক্ত আসন এক হাজার ৮০৮টি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন হাজার ২৬৩টি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ হাজার ৫০টি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ হাজার ৮০টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ হাজার ২০০টি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২ হাজার ৪১৯টি ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত হাজার ৩০০টি পরীক্ষা নেওয়ার আসন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৫
এসএস/এসআইএস