ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৫ রমজান ১৪৪৬

শিক্ষা

ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সব ধরনের রাজনীতি স্থগিত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৫
ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সব ধরনের রাজনীতি স্থগিত

ফরিদপুর: ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (এফইসি) ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে রাজনীতি বন্ধ না করে স্থগিত করার সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাতে কলেজের বোর্ডে টাঙানো নোটিশ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে গত ১ মার্চ কলেজে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়ার পর থেকে কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছিল সাধারণ শিক্ষার্থীরা।  

জানা যায়, গত ১ মার্চ আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশনা দিয়ে কলেজের সিভিল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাসেলকে সভাপতি এবং মো. আব্দুল আউয়ালকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খলিল, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান আসিফ এবং এডিসন চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। এরপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কলেজে রাজনীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।  

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যায় কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিতের নোটিশে স্বাক্ষর করেন অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আলমগীর হোসেন।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট কলেজের একাডেমিক কাম-প্রশাসনিক কাউন্সিল সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে নোটিশ জারি করেন তৎকালীন অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান। নিষিদ্ধের মধ্যে দিয়ে নতুন করে গত ১ মার্চ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের খবর প্রকাশ হওয়ায় ক্ষোভে ফুসে উঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কমিটির ঘোষণার পর থেকেই নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।  

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার বিকেলে একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের জরুরি সভা ডাকে কলেজ প্রশাসন। পরে সন্ধ্যায় এক নোটিশে জানানো হয়, ‘ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হলো। ’ এর ব্যত্যয় ঘটলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয় নোটিশে।  

কলেজ ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধ না করে স্থগিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সাধারণ শিক্ষার্থী আসিফ আহমেদ বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম নিষিদ্ধ, কিন্তু প্রশাসন সেটা না করেছে স্থগিত। এটা কোনো সমাধান হতে পারে না।

তিনি বলেন, ছাত্রদলের কমিটি হওয়ার পর থেকে কলেজে বহিরাগতরা মহড়া দিতে থাকে।  
 
সদ্য ঘোষিত ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাসেল জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা যখন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন, তখন আমরা ছাত্ররা কেন রাজনীতি করতে পারব না? আমাদের ক্যাম্পাসের তিনজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার কমিটিতে রয়েছে। তারা যেহেতু রাজনীতি শুরু করেছে শিক্ষার্থীরাও রাজনীতি করবে।
 
কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে মহড়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসে যারা অবস্থান কর্মসূচি করছে তাদের অধিকাংশই ছাত্রলীগের দোসর। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির তিনজন এবং ছাত্র শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৫
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।