ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘জাতিকে পথ দেখাবে আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা’

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫
‘জাতিকে পথ দেখাবে আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা’ ...

চট্টগ্রাম: আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ দেখাবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক।  

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) উদ্যোগে এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের ব্যবস্থাপনায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে অমর একুশে বই মেলায় ‘সমাজ বিনির্মাণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রেরণা যোগাবে’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ইন্টারিম গভর্মেন্ট অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্য এসেছে। আমাদের সেরকম কোন রাজনৈতিক অভিলাষ নেই।

এখানে পরবর্তী পর্যায়ে মানুষের ভোটে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনগুলো দেশের দায়িত্ব নেবেন। আশা করছি যে তারা এই মুক্তচিন্তাকে অবারিতভাবে লালন করবেন। জুলাই অভ্যুত্থানের এই শহীদদের দায় দায়িত্ব রাষ্ট্রের উপরে অর্পিত হয়েছে। রাষ্ট্র সেই দায় পালন করবে। পালন করতে গিয়ে প্রতিবছরই আয়োজন হবে। এইটার অঙ্গীকার অনেকদূর পর্যন্ত আমাদের বয়ে নিয়ে যাবে। আগামীতে যে তরুণ সমাজ আসবে তাদেরকে তাদের যে সমস্ত প্রশ্ন তার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য সমাজ এবং রাষ্ট্রকে রাজনীতিকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা একটা অভিযাত্রা। আপসহীন অভিযাত্রা যা তারা অর্জন করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আমাদের পায়ের নিচে ছিল অবারিত বাংলা। শত্রু ছিল বাইরে। শত্রু সশস্ত্র ছিল আমরাও সশস্ত্র ছিলাম। আর এবারের এই জুলাই অভ্যুত্থানের সংগ্রাম বৈষম্যের বিরুদ্ধে। নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে। অসাম্যের বিরুদ্ধে। অহংকার-অন্ধত্বের বিরুদ্ধে। যে লড়াই লড়েছে সে লড়াই ছিল নিজের সাথে নিজের লড়াই। আমাদের সকল মন্দের বিরুদ্ধে, আমাদের সকল অসত্যের বিরুদ্ধে, অন্যায় এর বিরুদ্ধে আমাদের ন্যায়ের সংগ্রাম। এই সংগ্রাম লড়া হয়েছে প্রকাশ্যে রাস্তায় এবং অস্ত্রের বিরুদ্ধে খালি হাতে বুক পেতে দিয়ে এই লড়াই লড়েছে। এর অনন্যতা অসাধারণ। মানুষ কতটুকু ডেসপারেট হয়ে গেলে এইরকম একটা আন্দোলন, এরকম একটা সংগ্রাম সৃষ্টি করতে পারে। আর সেই সংগ্রামে সশস্ত্র শক্তিকে উৎখাত করে দিতে পারে। এটা একটা বহুকাল ধরে আমাদের জাতিকে এর চেতনা অগ্রবর্তী করবে। এগিয়ে নিয়ে যাবে। বইমেলার মধ্যে নানান আঙ্গিকে এর প্রতিবাদ হবে। আমরা সেই আশা করছি।  

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে আমরা কথা দিচ্ছি আগামীতে এটা একটা লেখক নির্ভর বইমেলা হবে। আমরা বাংলাদেশের সব লেখককে ইনভাইট করব এবং তাদেরকে আমরা বলব যে তাদের বইগুলো যাতে তারা এখানে প্রকাশিত করে এবং এখানে তারা ডিসপ্লে করে। আমরা ট্রাই করছি একটা নতুন কিছু হয়তোবা ইনশাল্লাহ আমরা করব। ভবিষ্যতে আরো গোছালো, বৃহৎ পরিসরের বইমেলার আয়োজন করা হবে। এই ধরনের চিন্তাভাবনা নিয়ে আমরা আগাচ্ছি। বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়নি। বই কিনুন বই পড়ুন। জ্ঞানের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করুন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার বলেন, দেশকে বদলানোর ১৯৭১ সালে একবার সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা আমাদের অনৈক্য দিয়ে, আমাদের বিভক্তি দিয়ে, আমাদের চুরি, লুটপাট, ডাকাতি দিয়ে সেই সুযোগ অবহেলায় হারিয়েছে। আবার আমাদের ছাত্র সমাজ আরেকবার নিজেদের জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে আমাদেরকে সমাজ বিনির্মাণের আরেকটা সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ যদি আবার আমরা হারাই, তাহলে জাতিকে খেসারত দিতে হবে। কাজেই এই সুযোগ কিভাবে কাজে লাগাতে হবে সরকার চিন্তা করছে। যুক্তিসংতভাবে সংস্কারের মধ্য দিয়ে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। আমাদের পরামর্শ ছিল সর্বপ্রথমে শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জন্য। অন্যান্য সংস্কার কমিশন গুলো শতভাগ সফলতা অর্জন করতে পারবে না যদি শিক্ষা সংস্কার কমিশন না করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. ইমরান বিন ইউনুস, শাহাবুদ্দিন বাবু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫
পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।