ঢাকা: জামায়াতে ইসলামী নেতা নয়, নীতি প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রাজধানীর শ্যামলীতে বাদশাহ ফয়সল ইনস্টিটিউটে চিকিৎসকদের সম্মানে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মেডিকেল থানা শাখা আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।
রমজানের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে চিকিৎসকদের মানবসেবায় আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করার জন্য আল্লাহ আমাদের ওপর সিয়ামকে অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দিয়েছেন, তাই এ মোবারক মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে।
মেডিকেল থানা আমির ডা. স ম খালিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, এনডিএফ সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এবং থানা সহকারী সেক্রেটারি ডা.হাসানুল বান্না।
উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, জিয়াউল হাসান, ডা. আব্দুল জলিলসহ অনেকে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, পবিত্র মাহে রমজান একটি মোবারক মাস। রাসূল (সা.) রজব মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এ বলে দোয়া করতেন, হে আল্লাহ তুমি আমাদের রজব ও শাবান মাসের বারাকাহ ও কল্যাণ নিশ্চিত করো এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের পৌঁছে দাও। কারণ, হাদিসে রাসূল (সা.)-এ রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমত, মধ্যের ১০ দিন মাগফিরাত তথা গোনাহ মাফ, আর শেষ ১০ দিনকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। হাদিসে রাসূল (সা.)-এর অন্যত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সঙ্গে রমজান মাসে সিয়াম পালন করবেন, আল্লাহ তার পূর্বের সব গোনাহ মাফ করে দেবেন। মূলত, মাহে রমজান আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া ও তাজকিয়া অর্জনের মাস। তাই এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
তিনি মাহে রমজানের শিক্ষা বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
জাকাত ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, শাড়ি-লুঙ্গি বা খাদ্যদ্রব্য নয় বরং এমনভাবে জাকাত দেওয়া উচিত, যাতে একজন ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলামী রাষ্ট্র না হওয়ায় সরকারি জাকাত ব্যবস্থাপনায় জনগণের আস্থা নেই। তাই মানুষ সরকারকে জাকাত দিতে চায় না। মূলত, জামায়াতে ইসলামী নেতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় না, আল্লাহর দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
তিনি বলেন, জামায়াত নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আল্লাহর কুরআন বিজয় করতে চায়। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসেই মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়েছে বলে এ মাসের এতো মর্যাদা। মূলত, এ মাসকে কুরআনের মাসও বলা হয়। তাই মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে হবে কুরআনের আদর্শের ভিত্তিতেই।
তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় চিকিৎসকদের দাওয়াতি কার্যক্রম বাড়ানোর আহ্বান জানান।
মোবারক হোসাইন বলেন, রমজানে সিয়াম পালন শুধু আমাদের জন্য নয় বরং পূর্ববর্তীদের জন্যও অত্যাবশ্যকীয় ছিল। আমরা যাতে তাকওয়া অর্জন করতে পারি, সেজন্যই রোজা আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। তাই পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে তাকওয়ার সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. স ম খালিদুজ্জামান বলেন, আমরা সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই চিকিৎসাকে শুধু পেশা হিসেবে নেয়, মানবসেবা হিসেবে নিতে হবে।
তিনি চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৫
টিএ/এসআই