ঢাকা, সোমবার, ২ চৈত্র ১৪৩১, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৬ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

বরগুনায় ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যা, খুনিরা অধরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫১ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৫
বরগুনায় ধর্ষণ মামলার বাদীকে হত্যা, খুনিরা অধরা

বরগুনায় মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার বাদী বাবা মন্টু চন্দ্র দাস হত্যার খুনিদের শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এতে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।



অন্যদিকে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে বর্তমানে অথৈ সাগরে পড়েছে পরিবারটি। তিন সন্তানের মধ্যে ছোট মেয়ের বয়স দেড় মাস, চার বছর ও ১০ বছর বয়সী দুই মেয়ের চোখে বাবাকে হারানোর শোক। একবেলা খেতে পান তো আরেক বেলা অন্যের দিকে চেয়ে থাকতে হচ্ছে। স্বামীর অবর্তমানে পরিবারটির হাল ধরার জন্য নিজের একটি চাকরির কথা জানালেন বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আলমের কাছে।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাত ১টার দিকে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি করইতলা এলাকার নিজ বাড়ির পেছন থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।  

বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে বরগুনা সদর থানায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।  

অপরদিকে মেয়েকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে বিচার চেয়ে দায়েরকৃত মামলার বাদী বাবাকে হত্যার অভিযোগ ওঠায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (১১ মার্চ) রাতে বরগুনা পৌর শহরের কালিবাড়ী এলাকার নিজ ঘরের পেছনের একটি ঝোপঝাড় থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার ছয়দিন আগে গত ৫ মার্চ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় সজীব চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে ওই দিনই এ মামলায় অভিযুক্ত সজীবকে গ্রেপ্তার করলে, আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।  

নিহত মন্টু দাসের স্ত্রী বলেন, মেয়েকে ধর্ষণের পর আমার স্বামী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে যেদিন মামলার তারিখ তার আগেই রাতে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের সন্দেহ হয় ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তেরও স্বজনরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। স্বামীকে হারিয়ে এখন সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে আছি। কীভাবে আমাদের সংসার চলবে তা জানি না।  

নিহতের বোন বলেন, মেয়ের মুখ থেকে ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা শুনে তাকে নিয়ে থানায় গিয়ে অভিযুক্ত সজীবের নামে মামলা দায়ের করা হয়। পরে অভিযুক্তের বাবা শ্রীরাম আমার ভাইয়ের সাথে মিলে যাওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায়  আলাপ-আলোচনা করেন। অন্যথায় ছেলে ছাড়া পেলে ভুক্তভোগীদের দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি ধামকি ও দেন বলে জানন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের এলাকায় কোনো শত্রু নেই। মেয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ায় মামলা দায়েরের পর অভিযুক্তরাই তার একমাত্র শত্রু। আর এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার বিকেলে ভাইয়ের সঙ্গে মিলে যাওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগের পরই রাতে তার মরদেহ পাওয়া যায়।  

এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, নিহত মন্টুর স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত চলমান আছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০২৫
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।