ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ১৩ মার্চ ২০২৫, ১২ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম

সরোয়ার হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৫
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হলেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম অধ্যাপক নার্গিস বেগম

যশোর: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম। তিনি যশোর জেলা বিএনপির সদ্য বিদায়ী কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন।


বুধবার (১২ মার্চ) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।


অধ্যাপক নার্গিস বেগম বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের স্ত্রী এবং দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মা।


অধ্যাপক নার্গিস বেগম এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। তার রাজনীতির সূচনা হয় ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে। তিনি ঢাকা ইউনিভার্সিটির তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের বৃহত্তর যশোর জেলা (যশোর, মাগুরা, নড়াইল ও ঝিনাইদহ) কমিটির সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন।

 

ছেলে ও বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত অধ্যাপক নার্গিস বেগম দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার সংবাদে বাংলানিউজকে অভিব্যক্তি প্রকাশ করার প্রথমেই বলেন ‘আলহামদুলিল্লাহ’।

 

তিনি জানান, অধ্যাপক নার্গিস বেগম বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন রাজনীতিক হিসেবে খুলনা বিভাগে দলের সাংগঠনিক অবস্থান সংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। জিয়াউর রহমানের খালকাটা কর্মসূচিতেও তার ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাকালীন সময়েও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রথমে নার্গিস বেগমকে দায়িত্ব প্রদান করতে চাইলে তিনি সরাসরি কোনো দায়িত্ব গ্রহণ না করে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

 

অমিত বলেন, এরশাদ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অধ্যাপক নার্গিস বেগমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেসময় বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া যশোরসহ খুলনা বিভাগে যতবার এসেছেন ততবারই অধ্যাপক নার্গিস বেগম তার সঙ্গী হিসেবে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেসময়ে স্বৈরাচারের হাতে গুমের শিকার যশোরসহ খুলনা বিভাগের ২২জন রাজনীতিকের বাড়িতে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে গেছেন তিনি। ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সেই সময়ে বেগম খালেদা জিয়া একাধিকবার তাদের বাড়িতেও এসেছেন।

 

দলের একাধিক নেতা বাংলানিউজকে বলেছেন, অধ্যাপক নার্গিস বেগম বরাবরই দলীয় পদ-পদবী গ্রহণ করতে চাননি। সর্বশেষ দলের জেলা সম্মেলনেও তাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে একাট্টা হয়েছিলেন দলের নেতাকর্মীরা। কিন্তু, তরুণদের ওপর নেতৃত্বভার ছেড়ে দেওয়ার জন্য তিনি সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি।

 

দলের নেতারা আরও বলেন, রাজনীতির ময়দানে তিনি সবসময়ের জন্য নেপথ্যের কারিগর থেকেছেন। নেতাকর্মীদেরকে উজ্জীবিত করা এবং রাজনৈতিক নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে তিনি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

 

সদ্য বিদায়ী কমিটিতে তাকে জোর করেই আহ্বায়ক করা হয়। দলের বৃহত্তর স্বার্থে তিনি সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে যশোরের রাজপথ উত্তাল রেখেছিলেন। এবার কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার মাধ্যমে একজন রাজনীতিকের দীর্ঘ অবদানেরই স্বীকৃতি মিললো বলে এসব নেতার অভিমত।


অধ্যাপক নার্গিস বেগম একজন শিক্ষাবিদ হিসেবেও বেশ পরিচিত। তিনি যশোর সরকারি সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে পেশাগত জীবন শেষ করেন। বর্তমানে তিনি যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিংশুক সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের সভাপতি হিসেবে তিনি জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।


এদিকে, অধ্যাপক নার্গিস বেগম বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত হওয়ার সংবাদে উল্লাসে ফেটে পড়েছেন যশোরে দলের নেতাকর্মীরা। রাতে এই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শহরের ঘোপ এলাকায় তার বাড়িতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা ছুটে যান তাকে শুভেচ্ছা জানাতে।


নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, এই পদপ্রাপ্তিতে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম এবার যশোরসহ খুলনা বিভাগে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান আরও সংহত করতে অবদান রাখবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৩ ঘণ্টা, ১৩ মার্চ ২০২৫
এসএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।