ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৪ মার্চ ২০২৫, ০৩ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ইমরানের মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত সাদিক অ্যাগ্রোর এমডিসহ ৫-৭ জন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২৫
ইমরানের মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত সাদিক অ্যাগ্রোর এমডিসহ ৫-৭ জন

ঢাকা: সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ইমরান হোসেনের ১৩৩ কোটি টাকা অর্থপাচারে আরও ৫-৭ জন জড়িত। এদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তৌহিদুল আলম জেনিথও রয়েছেন।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদর দপ্তরে এই বিষয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব।

তিনি বলেন, সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. ইমরান হোসেনকে মানিলন্ডারিং, অর্থপাচার, অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু আমদানি এবং বিভিন্ন জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।  তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করা হয়েছে এবং তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

একরামুল হাবিব আরও জানান, ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সহযোগিতায় চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ১৩৩ কোটি টাকার অধিক অর্থ মানিলন্ডারিং অপরাধের মাধ্যমে অর্জন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার এই কাজে সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল আলম জেনিথসহ আরও ৫-৭ জন জড়িত। তাদের নামেও মোহাম্মদপুর থানায় মানিলন্ডারিংয়ের মামলা করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে বাকিদের নাম এখন প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, ইমরান হোসেন তার সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে অনুমোদনহীন ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি ও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা পাচার করেছেন। এই সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার হতে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় করেছেন মর্মে অভিযোগ রয়েছে।

অতিরিক্ত ডিআইজি আরও বলেন, ইমরান প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু/ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রয় করে অবৈধভাবে আয় করে প্রায় ১২১ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ১৪৪ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

গ্রেপ্তার ইমরান সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে থাকা ১৫টি ব্রাহামা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা বলে জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজ-পত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে গরুগুলোকৌশলে হাতিয়ে নিয়েছেন। মো. ইমরান হোসেনসহ তার অন্যান্য সহযোগীরা বিভিন্ন উপায়ে অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে অর্জিত মোট ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকা তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে বিনিয়োগ করে লন্ডারকৃত সম্পদে রুপান্তর করেছেন। এছাড়া মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবর দখল করে সাদিক অ্যাগ্রোর অবৈধ ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন।

মোহাম্মদপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে ইমরানের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় পলাতক সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ জড়িত এমন কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত ডিআইজি একরামুল হাবিব বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ৫-৭ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাচ্ছি। কিন্তু যেহেতু এগুলোর কনক্লুসিভ প্রমাণ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি, তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করা এই মুহূর্তে সঠিক হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২৫
এসসি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।