ঢাকা, শুক্রবার, ৩০ মাঘ ১৪৩১, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

৪ একর জায়গাজুড়ে আগুন, বর্জ্যের গন্ধ-কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ জনগণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
৪ একর জায়গাজুড়ে আগুন, বর্জ্যের গন্ধ-কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ জনগণ

ফরিদপুর: জেলা সদর উপজেলার আদমপুর এলাকায় পৌরসভার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ এলাকার প্রায় ৪ একর জায়গার বর্জ্যের ভাগাড়ে গত ১৫-১৬ দিন ধরে আগুন জ্বলছে। পোড়া বর্জ্যের তেজস্ক্রিয়তা, গন্ধ ও কালো ধোঁয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পৌরসভার তিন গ্রামের মানুষ।

স্থানীয়রা বলছেন, বর্জ্যের ভাগাড়ে টানা আগুন ও এর তেজস্ক্রিয়তার কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন প্লান্টের উত্তর অংশের তিনটি গ্রাম, নদী বন্দর এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এমন পরিস্থিতি নষ্ট করছে পরিবেশ ও প্রাণীকুলকেও।  

জেলার পরিবেশ অধিদপ্তর এ পরিস্থিতিকে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয় হিসেবে দেখছে। সংস্থাটি বলছে, পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর যত দ্রুত সম্ভব এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।  

জানা গেছে, পৌরসভার বিভিন্ন বাসা-বাড়ি, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজ-মাদরাসা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে সংগৃহীত বর্জ্য আদমপুর এলাকায় অবিস্থত পৌরসভার প্রক্রিয়াকরণ এরিয়ায় নিয়ে আসা হয়। আবর্জনাগুলো এই স্থান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্য প্রক্রিয়াকরণের কথা থাকলেও সেটি হচ্ছে না; ফলে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনাগুলো আদমপুরের ভাগাড়ে জমে যায়। সম্প্রতি আবর্জনাগুলো বিনাশের জন্য ভাগাড়ে আগুন দেওয়া হয়। কিন্তু গত অন্তত ১৬ দিনেও সেই আগুন নেভানো হচ্ছে না। আকাশে-বাতাসে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের গ্রামগুলোর বাসা-বাড়িতে ছাই জমছে।  

স্থানীয়দের দাবি, টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আগুন জ্বালিয়ে রাখায় বিরূপ প্রভাব পড়ছে প্লান্ট থেকে দেড় কিলোমিটারেরও বেশি দূরের এলাকায়। ওইসব এলাকার মানুষ কালো ধোঁয়ার সঙ্গে পোড়া পলিথিন, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য দ্রব্যের তেজস্ক্রিয়তার কারণে চোখে জ্বালা-পোড়াসহ শ্বাস কষ্টে ভুগছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।  

প্লান্টের উত্তর অংশের আইজউদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, পরান বিশ্বাসের ডাঙ্গী ও মোস্তফার ডাঙ্গী গ্রামের কয়েকশ পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ পরিবেশ দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ায় নদী বন্দর এলাকার ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়ছেন। ভুক্তভোগীরা নিজেদের ও পরিবেশের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্টদের কাছে অতি দ্রুত আগুন নেভানোর দাবি করেছেন।  

ফরিদপুর পৌরসভার দায়িত্বে থাকা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক চৌধুরী রওশন ইসলাম স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর আদমপুর এলাকার ময়লার ভাগাড়ের আগুন তাৎক্ষণিক নেভানোর নির্দেশ দেন। যদিও পৌরসভার পানিবাহী সাধারণ গাড়ি দিয়ে বুধবার বিকেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হলেও সেটি ব্যর্থ হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পৌরসভার সাধারণ পানিবাহী গাড়ি দিয়ে এত বড় আকারের আগুন নেভানো সম্ভব নয়। তাদের ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দরকার।

বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি নিয়ে কথা বলেননি।

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার বলেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৫
এসআরএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।