ঢাকা: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম বাড়ানো ও রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা প্রচারের জবাব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) বোসরা ইসলাম সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা থেকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কিছুদিন ধরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম না কমানো পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধের বিষয়ে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের বিভ্রান্ত করার জন্য একটি গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা প্রচার করছে, যা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের দামের সঙ্গে প্রিয় প্রবাসীদের দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর কোনোরূপ সম্পর্ক নেই। একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করতে এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবসায়িক স্বার্থ ক্ষুণ্ন করতে কোনো যুক্তিযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়া মনগড়া তথ্য শেয়ারের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পনামাফিক প্রোপাগান্ডা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ২৬ জানুয়ারি অ্যাসোসিয়েশন অব ট্র্যাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) একটি সংবাদ সম্মেলন করে এয়ার টিকিটের দাম কমানোর পাশাপাশি যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকিট বিক্রি ও মজুতদারি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কিছু প্রিন্ট মিডিয়াতে খবর প্রকাশিত হয় যে, ‘বিমান টিকিটের মজুতদারি বন্ধের দাবি আটাবের’। এরপরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি মহল বিভিন্ন নামে-বেনামে ফেইসবুক প্রোফাইল এবং পেজের মাধ্যমে আলোচ্য প্রোপাগান্ডাটি ছড়াতে থাকে। অথচ উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আটাবের সভাপতি বা সদস্যরা কোথাও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা বিমানের কথা উল্লেখ করেননি বরং এয়ার টিকেট বা এয়ারলাইন্সের কথাই আটাব থেকে উল্লেখ করা হয়।
আটাবের সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান অন্যতম বড় সমস্যা এয়ার টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য বাড়ানো। এ মূল্য বাড়ানোর নেপথ্যে অন্যতম প্রধান কারণ নামবিহীন গ্রুপ টিকিট বুকিং।
তিনি বলেন, মূলত মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্সগুলো ফ্লাইটের তারিখের অনেক আগেই আসন বিক্রি নিশ্চিত করা এবং অধিক মুনাফার জন্য এ পদ্ধতি অবলম্বন করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সুস্পষ্টভাবেই সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত এয়ারলাইন্স শব্দের পরিবর্তে ‘বিমান’ শব্দটি ব্যবহার করার ফলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। উক্ত ‘বিমান’ শব্দটি ব্যবহারের পরিবর্তে ‘এয়ার টিকিট বা এয়ারলাইন্স’ শব্দ ব্যবহারে বিভিন্ন প্রেস ও পাবলিক মিডিয়া আরও মনোযোগী হবে বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশা করে।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সুস্পষ্টভাবেই উল্লেখ করতে চায় যে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিদ্যমান বুকিং ও টিকিটিং পলিসি অনুযায়ী টিকিট বুকিং বা রিজারভেশন সিস্টেমে মধ্যপ্রাচ্যগামী বা শ্রমিক ভিসায় প্রবাসগামী রেমিট্যান্স যোদ্ধা বা অন্যান্য যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোনো সেক্টরে নাম কিংবা নামবিহীন গ্রুপ বুকিং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স অনুমোদন করে না। বিমানের বিদ্যমান টিকিট বুকিং বা রিজারভেশন সিস্টেমে যাত্রীদের নাম এবং পাসপোর্টের বিস্তারিত তথ্যাদি, যোগাযোগের তথ্যাদি (মোবাইল নম্বর, ই-মেইল, প্রভৃতি) ছাড়া টিকিট বুকিং/টিকিট বিক্রয়ের কোনো সুযোগ বা অবকাশ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিমানের টিকিটের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। সব নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করেই টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হয়। বিগত ছয় মাসের তুলনায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গন্তব্য যেমন- জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা সেক্টরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভাড়া বাড়েনি বরং কিছু কিছু সেক্টরে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও যাত্রীদের সুবিধার্থে ভাড়া কমানো হয়েছে। বিমানের ওয়েবসাইট, বিমান মোবাইল অ্যাপে সব টিকিট সবার জন্য উন্মুক্ত, যে কেউ বিমানের ওয়েবসাইট, বিমানের মোবাইল অ্যাপ, বিমান সেলস সেন্টার, বিমান অনুমোদিত ট্র্যাভেল এজেন্ট এবং বিমান কল সেন্টার থেকে টিকিট ক্রয় করতে পারেন।
সুতরাং রেমিট্যান্স পাঠানোর সঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত আলোচ্য মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা থেকে সতর্ক থাকার জন্য সর্বসাধারণ এবং প্রবাসীদের বিশেষ অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সংক্রান্ত সঠিক তথ্যের জন্য বিমানের ওয়েবসাইট (www.biman-airlines.com), বিমান মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করুন এবং যোগাযোগ করুন: বিমান সেলস সেন্টার ও কল সেন্টারে (১৩৬৩৬, ইন্টারন্যাশনাল: +৮৮০৯৬১০৯১৩৬৩৬)।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৫
এমআইএইচ/আরবি