ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮ রজব ১৪৪৬

জাতীয়

পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্তও মানছে না বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছেই

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০২৫
পতাকা বৈঠকের সিদ্ধান্তও মানছে না বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছেই বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বিজিবি ও বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের চৌকা সীমান্তে নিয়মবহির্ভূতভাবে বারবার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। সদর দপ্তরের চিঠি ছাড়া সীমান্তে তারা এ ধরনের কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না বলে বিজিবির সঙ্গে পতাকা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলেও তা মানছে না বিএসএফ।

এর জেরে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে। উভয় দেশের জনগণও লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নিচ্ছে সীমান্ত এলাকায়।  

চৌকা সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টার বিষয়ে বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুরে বিজিবি ও বিএসএফের অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়। তার আগে হয় আরও দুটি পতাকা বৈঠক। তিনটি বৈঠকেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু বিএসএফ তা ভঙ্গ করে আবার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা চালিয়েছে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১৭৭/১এস ও ২এস এলাকায় পাঁচ-ছয় মাস আগে আওয়ামী লীগ আমলে সীমান্তের নোম‍্যানস ল‍্যান্ড থেকে ৫০ গজ এগিয়ে বাংলাদেশের অভ‍্যন্তরে (আন্তর্জাতিক শূন্যরেখার ১০০ গজের মধ্যে) একটি কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করে বিএসএফ।  সেই রাস্তার পাশে তারা ৬ জানুয়ারি সকালে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করলে উত্তেজনা তৈরি হয়।
 
এদিকে সীমান্তে বাংলাদেশের ভূমিরক্ষায় স্থানীয়রা বিক্ষোভ করতে থাকেন। তারা বিএসএফের অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে বিজিবির সঙ্গে সীমান্তে অবস্থান নেন। অন্যদিকে সীমান্তের ওপাশে ভারতীয় নাগরিকদেরও বিএসএফের সঙ্গে অবস্থান নিতে দেখা যায়। ৭ জানুয়ারি সকাল থেকেই সীমান্তে বিজিবির অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, চৌকা সীমান্তে ১৭৭-এর ২ এস এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য বিএসএফ মাটি খনন করছিল। এসময় বিজিবির পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। এতে বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখে বিএসএফ। পরে আজ দুপুরে ‍দুই বাহিনীর অধিনায়ক পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।  

গোলাম কিবরিয়া জানান, দুই পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে, বিএসএফ বা বিজিবির হেডকোয়ার্টারের চিঠি বা অনুমতি ছাড়া সীমান্তে কোনো ধরনের বেড়া কিংবা স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না কোনো পক্ষ। এসময় উভয় দেশের বাহিনী তাদের নিজ নিজ ভূখণ্ডের জনসাধারণকে সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

বিজিবির অধিনায়ক আরও জানান, দুপুরের এ বৈঠকের পর বিকেলে সোনা মসজিদ বিওপির কনফারেন্স রুমে সেক্টর কমান্ডার পযার্য়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবির রাজশাহী সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ ইমরান ইবনে এ. রউফ। ভারতের পক্ষে মালদা সেক্টরের ডিআইজি তরুণ কুমার গৌতমের নেতৃত্বে ১১৯ বিএসএফ ব্যাটেলিয়ানের কম্যান্ডিং অফিসার সুরাজ সিংসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ঘিরে উত্তেজনা

বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০২৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।