ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রমজানে কৃত্রিম সংকট তৈরির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪
রমজানে কৃত্রিম সংকট তৈরির বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির

রমজানে কেউ যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য বাজার কমিটি, ব্যবসায়ী সমিতি ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, মজুদ, সরবরাহ ও সামগ্রিক দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

মতিঝিলে এফবিসিসিআইর সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উপস্থিত ছিল।

সভায় মাহবুবুল আলম তাদের বলেন, রমজান মাস ইবাদতের মাস। আপনারা সারা বছর ব্যবসা করেন, রমজান মাসেও করবেন। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোয় উৎসব উপলক্ষে ছাড় দেওয়া হয়। আমাদের দেশেও তেমন হতে হবে। কোনো ব্যবসায়ী পণ্যের বেশি দাম রাখবেন না। আপনারা রমজান মাসে ন্যায্য লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু এ বিষয়ে সতর্ক। তাই এই দিকে সবাইকে সাবধান হতে হবে। এফবিসিসিআই কোনো অসৎ ব্যবসায়ীর পক্ষে কথা বলবে না।

সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হলে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, পাইকারি বাজার থেকে খুচরা পর্যায়ে পণ্যের মূল্যের ক্ষেত্রে যাতে অস্বাভাবিক পার্থক্য না হয় সেজন্য মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

মাহবুবুল আলম আরও বলেন, রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক ও ন্যায্য মুনাফা অর্জনের জন্য ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে।  

রমজানে বাজার মনিটরিং প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ দিয়ে বাজার মনিটরিং করানো হোক, তা আমি চাই না। বাজার কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনিটরিং করলেই হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকি না করলে ব্যবসায়ীদের সরকারিভাবে হয়রানির শিকার হতে হবে। এটা আমরা চাই না। কাজেই আমি প্রতিটি বাজার কমিটিতে অনুরোধ করবো, আপনারা তদারকি কার্যক্রম জোরদার করেন।

সমাপনী বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, অসাধু কোনো ব্যবসায়ীর পক্ষে এফবিসিসিআই নেই। তাদের বিরুদ্ধে সবসময় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি এফবিসিসিআই থেকেই এবার বাজার মনিটরিং করা হবে।

এর আগে সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে নিজ নিজ অবস্থানের কথা তুলে ধরেন মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা ও মালিকরা। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে উল্লেখ করে ভোগ্যপণ্যের দাম না বাড়ার আশ্বাস দেন পণ্যের উৎপাদক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

আগামী ১০ দিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠতে যাচ্ছে। ফলে আসন্ন রমজানে বাজারে এ পণ্যের সঙ্কট হবে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেরাজুল ইসলাম বলেন, খেজুর আমদানিতে উচ্চ ডিউটি না থাকলে অনেক কম দামে বিক্রি করা যেত। অথচ, যারা ডিউটি নির্ধারণ করেন তাদের কোনো দায় হয় না। দায় হয় সরকারের অথবা ব্যবসায়ীদের।

রমজানে ব্রয়লার মুরগি, গরুর মাংস, মসলা ইত্যাদির দাম বাড়লে রেস্তোরাঁ মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান। এ বিষয়ে এফবিসিসিআই উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে তাকে আশ্বস্ত করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

সভায় এফবিসিসিআইর সহসভাপতি খায়রুল হুদা চপল, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, মো. মুনির হোসেন, পরিচালকবৃন্দ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, মিল মালিক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
জেডএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।