ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারীদের সংগ্রাম করেই রাজনীতিতে যোগ্য আসন ছিনিয়ে নিতে হবে: উপমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
নারীদের সংগ্রাম করেই রাজনীতিতে যোগ্য আসন ছিনিয়ে নিতে হবে: উপমন্ত্রী

খুলনা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি মজবুত না হলে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না। এ জন্য সংগ্রামের বিকল্প নেই।

নারীরা কোনো ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই। তাদের সংগ্রাম করেই রাজনীতিতে যোগ্য আসন ছিনিয়ে নিতে হবে।  

তিনি বলেন, সততা ও কর্মনিষ্ঠা থাকলে নারীরা শিগগিরই রাজনীতিতে তাদের যথাযোগ্য আসন পাবেন এ বিশ্বাস রেখে সামনে এগিয়ে চলতে হবে।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিভাগীয় পর্যায়ের অপরাজিতদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খুলনা প্রেস ক্লাবের ব্যাংকোয়েট হলে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি ও বাগেরহাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিজিয়া পারভীন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামরুজ্জামান টুকু, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ মোজাফ্ফর রহমান আলম, খুলনা জেলা বিএনপি নেতা আব্দুর রশীদ, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির জেলার সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দুলু।

সিনিয়র অপরাজিতাদের মধ্যে বক্তব্যে দেন বাগেরহাট জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি অ্যাডভোকেট শরীফা হেমায়েত, খুলনা বিভাগীয় অপরাজিতা নেটওয়ার্কের অ্যাডভোকেট তাছলিমা খাতুন ছন্দা, অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার পিয়া।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি ফারজানা ফেরদৌস নিশা।

অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন রামপাল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হোসনে আরা মিলি, মোংলা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহার হাই, বটিয়াঘাটা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান চঞ্চলা মণ্ডল, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাজিনা বেগম নারজিনা, মোসা. সুলতানা পারভীন, তানিয়া খানম, হোসনেয়ারা চম্পা, অ্যাডভোকেট লুনা সিদ্দিকী, অর্পা মল্লিক, রোকসানা পারভীন, সাহিদা ইসলাম নয়ন, আফরোজা খানম, মোছা. নাসিমা কবীর, মাধুরী সরকার, গায়ত্রী বিশ্বাস, শাহনাজ ইসলাম, রহিমা খাতুন, অ্যাডভোকেট পপি ব্যানার্জি, রাবেয়া সুলতানা প্রমুখ।

খুলনা জেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সম্পাদক আকলিমা খাতুন তুলির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রূপান্তর পরিচালিত অপরাজিতা প্রকল্পের সমন্বয়কারী সুবল ঘোষ টুটুল। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বটিয়াঘাটা উপজেলা অপরাজিতা নেটওয়ার্কের সভাপতি বুলু রায় গাঙ্গুলী। অনুষ্ঠানে মুক্ত আলোচনার সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারীরা দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক। ভোটারদেরও অর্ধেকই নারী। সে হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ, এমনিক জাতীয় সংসদেও নারী জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যা শতকরা পঞ্চাশ শতাংশ করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা নেই। নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ তে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরে পর্যায়ক্রমে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ও নির্বাচনে অধিকহারে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুপ্রাণিত করার বিষয়টি রয়েছে। কিন্তু এক যুগ পার হলেও নীতিমালার বাস্তবায়ন হয়নি। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও)- এ একটি ধারা যুক্ত করা হয় ২০০৯- এর সংশোধনীতে। এ ধারায় বলা হয়েছিল, ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের মূল কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যদিও তা সব রাজনৈতিক দল নিশ্চিত করতে না পারায়, এখন ২০৩০ সালকে টার্গেট করে নির্বাচন কমিশন আরপিও’র একটি সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। সুতরাং আরপিও বাস্তবায়নের জন্যও দলগুলোর একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বক্তারা আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ সংসদীয় আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া ও রাজনৈতিক দলের সব কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীকে যুক্ত করার সঙ্গে সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ পদে বিশেষ করে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে নারীকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। এক্ষেত্রে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন ও জাতীয় নীতিতে আরো সুস্পষ্ট ও জোরালোভাবে যেন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়, সে দাবিও জানানো হয়।

 প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডের সহায়তায় ও হেলভেটাস সুইস ইন্টারকোঅপারেশন তত্ত্বাবধানে রূপান্তর খুলনা ও বাগেরহাট জেলার ১১টি উপজেলার ৮৪টি ইউনিয়নে ‘অপরাজিতা: নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।  

 প্রকল্পটি স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত নারী প্রতিনিধি তথা নির্বাচনে আগ্রহী নারী নেত্রীদের দক্ষতা উন্নয়ন, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ এবং স্থানীয় ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সংলাপসহ নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। অপরাজিতারা নারীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ও এসডিজি অর্জনে কাজ করছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
এমআরএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।