ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিসিসি নির্বাচন: বাস্তবে ভাগ্যের পরিবর্তন চান কলোনিবাসী

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
বিসিসি নির্বাচন: বাস্তবে ভাগ্যের পরিবর্তন চান কলোনিবাসী

বরিশাল: শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পর দুইবার মেয়র পাল্টাইছে, কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। এর বড় প্রমাণ সিটি মার্কেট প্রান্ত থেকে কলোনিতে প্রবেশ করতে ভাটার খালের ওপর একমাত্র আয়রন ব্রিজটি।

ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে ৮-৯ বছর ধরে, কিন্তু কেউ মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। অথচ এই ব্রিজ পার হয়ে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, কীর্তনখোলা নদীর ওপর থাকা খাদ্য গুদামের পল্টুনেও যেতে হয়। এমনকি কোস্টগার্ডের সদস্যরাও তাদের জেটিতে যান এই পল্টুন পার হয়ে। বারবার বলার পরও মেরামত কিংবা পুনঃনির্মাণে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এখন ব্রিজটি দিয়ে চলাচলই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।  

আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে নিজেদের ভাগ্য নিয়ে এসব আক্ষেপের কথা বলছিলেন ভাটার খাল কলোনির বাসিন্দা সজীব।  

এই এলাকার ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, ভোটের সময় চলছে, এখন অনেকে অনেক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, কিন্তু আদৌ ব্রিজটি ঠিক করার কথা কেউ বলছে না। অথচ এই ব্রিজের কারণে কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী মানুষগুলোর ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।

তবে শুধু যে ভাটারখাল কলোনির এমন অবস্থা, তা কিন্তু নয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেয়র, কাউন্সিলর বদলালেও বরিশালের ২২টি কলোনির বাসিন্দাদের ভাগ্য তেমন একটা বদলায় না। কীর্তনখোলা নদীর তীরবর্তী নগরের চাঁদমারি এলাকার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কলোনির সংযোগ সড়কে আয়রন ব্রিজ নির্মাণ হয়েছে এক দশকের বেশি সময় হলো। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণ হয়নি, ফলে খুঁটি বেয়ে ব্রিজে উঠে তবেই চলাচল করতে হচ্ছে সবাইকে।

নগরের রসুলপুর এলাকার সঙ্গে কসাইখানা সড়কের সংযোগ ঘটাতে আয়রন ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও লঞ্চঘাট ও পোর্টরোডে আসতে এখনো খেয়া ব্যবহার করছেন মানুষ।

শুধু ব্রিজেরই যে সমস্যা, এমনটা নয়। নগরের অধিকাংশ কলোনিতে রয়েছে সুপেয় পানির অভাব। রাস্তাঘাটও ভাঙাচোরা। সেই সঙ্গে ড্রেনেজ ব্যবস্থার করুণ দশায় সামান্য বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা।

বছরের পর বছর ধরে রসুলপুরে থাকলেও জীবনমানের কোনো উন্নয়ন হয়নি জানিয়ে রসুলপুর কলোনির বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জাহানারা বেগম বলেন, ইলেকশন আইলে নেতারা বলে এইডা কইরা দিমু, ওইডা কইরা দিমু। কিন্তু শেষমেশ আমরা কিছুই পাই না।

নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও কলোনিতে উন্নয়নের ছিটেফোঁটাও লাগেনা জানিয়ে রসুলপুর কলোনির আরেক বাসিন্দা নাছিমা বলেন, নির্বাচন হওয়ার আগে সবাই বলে আমাদের সুযোগ-সুবিধা দেখার কথা, কিন্তু ভোটের পর তাদের ধারে কাছেও যেতে পারি না।  

একই কথা বলছেন রাজ্জাক কলোনির বাসিন্দারাও। তারা জানান, নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের রাজ্জাক স্মৃতি কলোনিতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি বিগত সময়ে।

তবে এবার শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবে দৃশ্যমান উন্নয়ন চান কলোনিগুলোর বাসিন্দারা। যা তাদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটাবে।

যদিও কলোনির আওতাধীন ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলররা এসব কথা মানতে নারাজ। তাদের মতে, যতটুকু বরাদ্দ পেয়েছেন সেটুকুই কলোনিগুলোর উন্নয়নে ব্যয় করা হয়েছে। যদিও নির্বাচিত হলে কলোনিসহ বর্ধিত এলাকার উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা বলেছেন ৭ মেয়র প্রার্থী।

উল্লেখ্য, নগরের ২২টি কলোনিতে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। যেখানে ভোটার প্রায় ৩৫ হাজার। আগামী ১২ জুন হবে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) ভোট।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২৩
এমএস/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।