ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ফেনীর সীমান্ত হাটে ফের বসবে ২ দেশের মিলনমেলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩
ফেনীর সীমান্ত হাটে ফের বসবে ২ দেশের মিলনমেলা

ফেনী: ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ভারতের শ্রীনগরের সীমান্ত হাঁটটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ফের চালু হবে, প্রস্তুতি নিচ্ছে দুই দেশের নীতি নির্ধারক মহল ও ব্যবসায়ীরা। দুই দেশের নো-ম্যাসল্যান্ডে আবার বসবে মিলনমেলা।

দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর আবার কাজে ফেরার অপেক্ষায় আছেন এই হাঁটটির দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। সীমান্তের হাটকে ঘিরে আবারও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা ভাবছেন স্থানীয়রাও।  

দুই দেশের সীমান্ত বাসীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানো ও বাণিজ্য প্রসারে বাংলাদেশের ফেনী জেলার ছাগলনাইয়ার মধুগ্রাম ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শ্রীনগর সীমান্তে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চালু হয় দেশের তৃতীয় সীমান্ত হাট। দু’দেশের আশপাশের পাঁচ কিলোমিটারে বসবাসরত গ্রামবাসীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সপ্তাহের একদিন বেচাকেনা হতো এই হাটে।  

পাঁচ বছর বেশ ভাল ভাবেই চলছিলো হাঁটের কার্যক্রম। পৃথিবীব্যাপী করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর ২০২০ সালে মার্চের ৩ তারিখ বন্ধ হয়ে যায় হাঁটটি। প্রায়দুই বছর পর আবার চালু হওয়ার অপেক্ষা এখন। এই হাটকে ঘিরে শুধু বিকি-কিনি নয় বসতো দুই দেশের মিলনমেলা। তৈরি হতো হাসি-আনন্দের দৃশ্যপট। দুই দেশে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনদের দেখা করতে লাগতো না পাসপোর্ট ভিসা। সেই মেলবন্ধন আবার তৈরি হওয়ার কথা ভেবে হাঁটের পাশবর্তী দুই দেশের স্থানীয়দের মধ্যেও বিরাজকরছে উচ্ছাস।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বেকার হয়ে পড়েছিলো। আবার যদি চালু হয় তাহলে তারা কর্ম সংস্থান ফিরে পাবে। হাটটি চালু হলে সুদিন ফেরার আশা করছেন স্থানীয়রাও।  

হাটের দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুল আফসার বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ভালভাবেই এই হাটে ব্যবসা করেছি। এখানে ব্যবসা করে অনেকের ভাগ্য ফিরেছে। দীর্ঘদিন হাট বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা বেকার হয়ে কষ্টে আছে। হাটটি আবার চালু হলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে।  

ভবানী দাস নামের হাটের এক নারী দোকানী বলেন, ‘অনেক কষ্টে লোন করে হাটে একটি দোকান দিয়েছিলাম। ভালোই চলছিলো হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পথে বসতে হয়েছে। ঠিকমতো চলতেও পারছিনা। লোনের জন্য মানবেতর জীবন যাপন করছি। হাট চালু হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।  

স্থানীয় সুয়া শাহ ফকির মাজারের খাদেম জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী বলেন, হাটের দিন এখানে অনেক মানুষ আসতো তারা এটা ওটা কিনতো। এ হাটকে ঘিরে ভালোই ছিলাম। প্রতি হাটে কিছু টাকা আয় হতো। তা দিয়ে ভালোই চলতো। হাটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে আয় কমেছে। এখন আমরা ভাল নেই।  

হাঁটটি চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রনালয়েরও নির্দেশনা আছে বলে জানান, ফেনীর জেলাপ্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল- হাসান।  

তিনি বলেন, সরকার চায় হাটটি দ্রুত চালু হোক। সেজন্য বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। হাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। দুই দেশের যাবতীয় পক্রিয়া শেষে শীঘ্রই এ হাটটি আবার চালু হবে বলে আশা রাখছি।  

এ হাটটিতে ভারত-বাংলাদেশিদের জন্য আলাদা আলাদা শেডে ২৭টি করে মোট ৫৪টি দোকান রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।