ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গাজায় অন্ধকার এক রাত, ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
গাজায় অন্ধকার এক রাত, ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলা অন্ধকার গাজায় হামলার অগ্নিশিখা

গাজায় মুহুর্মুহু বিমান ও কামান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ইসরায়েল বলছে, গাজায় তারা বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে।

খবর আল জাজিরা।  

এদিকে হামাসের সশস্ত্র গোষ্ঠী আল-কাশেম ব্রিগেডস হুমকি দিয়েছে, গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে নিরীহ বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ না করলে কোনো প্রাক-আভাস ছাড়াই জিম্মি ইসরায়েলিদের মেরে ফেলা হবে।  

সোমবার ইসরায়েল সম্পূর্ণভাবে গাজা অবরোধের ঘোষণা দেয়। উপত্যকাটিতে খাবার, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওয়াভ গ্যালান্ত বলেন, আমি গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরোধের নির্দেশ দিয়েছি। বিদ্যুৎ, খাবার, গ্যাসসহ সবকিছুই সেখানে বন্ধ থাকবে।  

লোকজনকে ক্ষুধার্ত রাখার অভিপ্রায়ে ইসরায়েলের এই ধরনের অবরোধ জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ।

গাজার স্থানীয় সময় রাত ২টা ২০ মিনিটের পরের একটি ছবি পোস্ট করে বিবিসির সাংবাদিক একটি প্রতিবেদন লিখেছেন, যেটির শিরোনাম- গাজা উপত্যকায় অন্ধকার এক রাত।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা এবং অবকাঠামোর ক্ষতি এলাকাটিকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করেছে। আর ওই ছবিতে ইসরায়েলি বিমান হামলার অগ্নিশিখায় গাজার ভবনগুলোর উপরে ধোঁয়ার মেঘ উড়তে দেখা যায়।  

ভোর ঘনিয়ে আসার কারণে এই অঞ্চলের খবরপ্রাপ্তি অনেকটাই ধীর হয়ে পড়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের সরকারগুলোর কাছ থেকে তথ্যের একটি অবিচ্ছিন্ন প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে।  

ইসরায়েলের সমর্থনে এক হয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানি। বিবিসি জানতে পেরেছে, মার্কিন রণতরী ভূমধ্যসাগরের পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে। গোলাবারুদ বোঝাই বিমানগুলো ইসরায়েলের পথে রয়েছে।   

এদিকে সিএনএনের দলগুলো ইসরায়েল থেকে গাজায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছে, যা আরও হামলার ইঙ্গিত দিচ্ছে।  

সিএনএনের সংবাদদাতা নিক রবার্টসন এসদেরত থেকে এবং অ্যশকেলন থেকে ক্লারিসা ওয়ার্ড জানিয়েছেন, সীমান্তের খুব কাছে যুদ্ধবিমান ওড়ার শব্দ পেয়েছেন।  

রবার্টসন আকাশে বড় ঝলকানি দেখেছেন এবং গাজা থেকে খুব, খুব ভারী শব্দ শুনেছেন। সিএনএনের দলগুলো গাজা সীমান্তের কাছে ড্রোন এবং হেলিকপ্টার ওড়ারও শব্দ পায়।  

ইসরায়েলের ঘোষণা করা সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজায় নতুন মানবিক সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। অবশ্য গাজার বাসিন্দারা বলছেন, শনিবার থেকেই গাজায় কোনো সহায়তা আসছে না।  

গাজায় ২০ লাখেরও বেশি লোকের বাস। ইসরায়েলের সঙ্গে শত্রুতা থাকায় এই অঞ্চলের ৮০ শতাংশেরই মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে হয়।  

গাজা হামাস দ্বারা শাসিত হলেও ইসরায়েল এর আকাশসীমা এবং এর উপকূলরেখা নিয়ন্ত্রণ করে। কে এবং কোন পণ্য এর সীমানা অতিক্রম করবে, তা ইসরায়েলের ওপরই নির্ভরশীল। প্রতিবেশী মিশরও কঠোরভাবে গাজা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।  

সোমবার অবরোধের ঘোষণা দিলেও শনিবার সকালে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় খাদ্য ও ওষুধসহ সব ধরনের সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

গাজায় এখন অনেক বাসিন্দা বর্তমানে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট ছাড়া রয়েছেন। শিগগিরই তাদের প্রয়োজনীয় খাবার এবং পানি সরবরাহ শেষ হতে যাচ্ছে।  

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, চার লাখেরও বেশি লোকের পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি সুবিধার ক্ষতি হয়েছে।  

তিনি বলেন, গাজা পাওয়ার প্ল্যান্ট এখন সেখানকার বিদ্যুতের একমাত্র উৎস এবং কয়েক দিনের মধ্যেই এর জ্বালানি শেষ হয়ে যেতে পারে।

গেল শনিবার সকালে ইসরায়েলে হামলা চালায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। জবাবে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সেনারা। দুই পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় দেড় হাজারের বেশি ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা কয়েক হাজার।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৩
আরএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।