ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা মামলা সুপ্রিম কোর্টে, শুনানি মঙ্গলবার 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা মামলা সুপ্রিম কোর্টে, শুনানি মঙ্গলবার 

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যা মামলা গেল সুপ্রিম কোর্টে। আরজি করের ঘটনায় স্বপ্রণোদিত মামলা হাতে নিল দেশটির শীর্ষ আদালত।

মামলা শুনবেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের তিন বেঞ্জ। জানা যাচ্ছে, সম্ভবত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) এ মামলার শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।  

তবে সমান্তরালভাবে মামলা চলবে কলকাতার হাইকোর্টেও। হাইকোর্টের নির্দেশেই তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে সিবিআই। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিবিআইকে তদন্তের নথি জমা দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।  

এদিকে রোববারও ভারতের মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর, কলকাতাসহ ২৭টি জায়গায় ন্যায়বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়েছে। তবে কলকাতা পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় কোথাও জারি করেছে ১৪৪ ধারা, কোথাও ১৬৩ ধারা। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট স্থানে রোববার বড় কোনো জমায়েত করা যাবে না। করা যাবে না মিটিং মিছিল।  

পশ্চিমবঙ্গে অনেক স্থানেই ইন্টারনেট দুর্বল। তবে এর মধ্যেই বিক্ষোভ প্রতিবাদ প্রদর্শিত হলো। এদিন শহরে একটানা বৃষ্টির মধ্যেই পথে নামেন কলকাতার বিনোদন জগতের কলাকুশলীরা। চিকিৎসক শিক্ষার্থীদের সংহতি জানাতে পথে নামে সুশীল সমাজ, ফুটবলের সমর্থকরা।

এদিন ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান ক্লাবের সমর্থকরা সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখান। বন্ধ করে দেওয়া হয় ডুরান্ড কাপের ইস্টবেঙ্গল এবং মোহবাগানের ফুটবল ম্যাচ। পুলিশ জানিয়েছে, তারা খেলার জন্য অত পুলিশ দিতে পারবে না। যদিও দুই দলের সমর্থকদের দাবি, তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব হলেও ঠিক করেছিলেন, মাঠের গ্যালারি থেকে সবাই হত্যার বিচারে আওয়াজ তুলবেন। আজ ৭০ হাজারের বেশি সমর্থক মাঠে থাকতেন। লাইভ খেলা সম্প্রচার হতো এক বিদেশি চ্যানেলে। প্রশাসন ভয় পেয়ে গেছে। খেলা বন্ধ এবং হত্যার বিচারের দাবিতে সমর্থকরা পথে নেমেছেন। সোমবার পথে নামতে চলেছে সমাজের বিশিষ্টরা।

অপরদিকে, বিক্ষোভ প্রতিবাদের মধ্যে ফের বিকৃত মন্তব্য করেছেন তৃণমূলের টিকিতে জয়ী কোচবিহারের সংসদ সদস্য উদয়ন গুহ। এক বক্তব্যে বলেন, শেখ হাসিনার মতো ভুল করবেন না মমতা। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের জনসভা থেকে তিনি বলেন, যারা মমতাকে আক্রমণ করছেন, তাদের আঙ্গুল ভেঙে দেওয়া হবে।

এরপরই বাংলাদেশের সরকার বিরোধী বিক্ষোভের তুলনা টেনে সংসদ সদস্য বলেন, হাসিনা যে ভুল করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ভুল করবেন না। এ ঘটনায় যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছে, যারা সামাজিক মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গালাগালি করছে, যারা আঙুল তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাইছে, সেই আঙুলগুলোকে চিহ্নিত করে ভেঙে দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। না হলে এরা পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ তৈরি করে ফেলবে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতাও দোষীদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন। আর সেই দাবিতে তিনি তুলনা টানছেন বাংলাদেশের। পরপর তিনি নানা প্রচার সভায় বলেছেন, চাইছে বাংলাদেশের মতো সরকার ফেলে দিতে। আমি তা হতে দেব না।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি হত্যার প্রতিবাদে এক দফা দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাদের অভিমত, শাসকদলের প্রভাবশালীদের দাপটেই নৃশংসভাবে হত্যা হয়েছে ছাত্রীটিকে। তবু প্রভাবশালীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। মমতার পতন না হলে কীসের বিচার? অপরদিকে, চিকিৎসক শিক্ষার্থীদের দাবি, আর জি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ হত্যার ঘটনায় সম্পূর্ণভাবে জড়িত। তা সত্ত্বেও তাকে সাসপেন্ড না করে আর জি কর থেকে কলকাতা মেডিকেল কলেজের স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এটি কীসের ইঙ্গিত?

বামেদের দাবি, ঘটনায় অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ জড়িত রয়েছেন, এটি দিনের আলোর মত পরিষ্কার। তবুও তাকে বহিষ্কার না করার কারণে বোঝা যাচ্ছে তিনি মমতার কত প্রিয়। ফলে সব মিলিয়ে শাসক, বিরোধী, শিক্ষার্থী ও সাধারণের আন্দোলনে উত্তাল হচ্ছে বাংলা, যার আঁচ পড়েছে গোটা ভারতে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
ভিএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।