ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কল্যাণী কাজীর দাফন সম্পন্ন, ফুলেল শ্রদ্ধা ভক্তদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
কল্যাণী কাজীর দাফন সম্পন্ন, ফুলেল শ্রদ্ধা ভক্তদের শেষ বিদায় জানাচ্ছেন কবি পরিবারের সদস্যরা

কলকাতা (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত): ফুলেল শ্রদ্ধায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধূ প্রয়াত কল্যাণী কাজীকে চির বিদায় জানিয়েছেন কলকাতাবাসী। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আয়োজনে রোববার (১৪ মে) তার মরদেহ রাখা হয় রবীন্দ্রসদন প্রাঙ্গণে।

স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান নজরুলপ্রেমীরা। শ্রদ্ধা জানান কল্যাণী কাজীর কাছের মানুষ এবং তার গুনগ্রাহীরাও। এ সময় সবার কণ্ঠে ছিল নজরুল সঙ্গীত।

শ্রদ্ধা জানিয়েছে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রেস সচিব রঞ্জন সেন। এরপর একে একে শ্রদ্ধা জানান কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র ফিরাদ হাকিম, মেয়র ইন কাউন্সিল দেবাশিষ কুমার, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, সিপিআইএমের প্রবীণ নেতা রবিন দেবসহ বিশিষ্ট জনেরা। শ্রদ্ধা জানিয়েছে নজরুল অনুরাগী অগ্নিবীনার মতো সংগঠনগুলো।

গত শুক্রবার (১২ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৫টায় কলকাতার সরকারি পিজি হাসপাতালে (এসএসকেএম হাসপাতাল) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কল্যাণী কাজী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বার্ধক্যজনিত কারণে মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন, ছেলে অরিন্দম কাজী।

বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছোট ছেলে কাজী অনিরুদ্ধ। তার সন্তান অরিন্দম কাজী এদিন জানান, রবীন্দ্রসদন থেকে মাকে নিয়ে যাচ্ছি দক্ষিণ কলকাতার ট্রাঙ্গুলার পার্কের বাসভবনে। সেখান কিছুক্ষণ রেখে নিয়ে যাব কবরস্থানে।

রবীন্দ্রসদন থেকে যখন কল্যাণী কাজীর মরদেহ শববাহি গাড়িতে তোলা হচ্ছিল তখন মেয়ে অনিন্দিতা কাজী প্রকাশ্যে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, সারপ্রাইজ দেব বলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি থেকে মাকে না জানিয়ে কলকাতায় এসেছিলাম। কিন্তু, মা আমাকে সারপ্রাইজ দিল। মা দিবসের দিন মাকে বিদায় জানাতে হচ্ছে, আমি ভাবতেও পারছি না।

কল্যাণী কাজীর মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান, কলকাতার মেয়রসহ অন্যরা

শুক্রবার হাসপাতালে কল্যাণী কাজীর মৃত্যুর পর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় দমদম পাইকপাড়ার বাসভবনে। সেই বাসায় তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে নিয়ে আসা হয় তোপসিয়া সংলগ্ন পিস ওয়ার্ডে। সেখানেই দুইদিন হিমঘরে রাখা ছিল তার মরদেহ। তারপরে রোববার মরদেহ রাখা হয় রবীন্দ্রসদনে প্রাঙ্গণে। সেখানেই সবাই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানায়। পরে পার্কসার্কাস এলাকার গোবরা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। অরিন্দম কাজী জানান, ওই কবরস্থানেই শায়িত আছেন বাবা কাজী অনিরুদ্ধ ও চাচা সব্যসাচী কাজী।

কলকাতার মেয়র হাকিম বলেন, ছোটবেলা থেকে যাদের ভাবধারায় আমরা বড় হয়েছি তারা একে একে করে সবাই বিদায় নিচ্ছেন। ৮ মে সমরেশ মজুমদারের চলে গেলেন। নিশ্চিতভাবে সমরেশ মজুমদারের যাওয়াটা বড় ক্ষতি। তারপর কল্যাণী দিদি। এটা এক অপূরণীয় ক্ষতি। যা কখনো পূরণ হবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শোক বার্তা দিয়েছেন। আমরা তার পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানাই।

কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে শুক্রবার শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৩
ভিএস/এসএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।