ঢাকা: মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ অনুযায়ী বিস্কুটসহ কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রীর ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন এ আদেশের কারণে যে প্রতিষ্ঠান ১০ কোটি টাকা ভ্যাট দিচ্ছে তাকে ৩০ কোটি টাকা দিতে হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কনফারেন্স হলে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যম আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব তথ্য জানান।
শফিকুর রহমান বলেন, ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ার কারণে প্রস্তুতকারকরা আর কম দামে বিস্কুট উৎপাদন করতে পারবেন না। আর কত ছোট করতে হবে, বিস্কুটের পরিমাণ আর কত কমাতে হবে?এতে নিম্ন আয়ের অপরিহার্য উৎস বন্ধ হয়ে যাবে, ভ্যাট বাড়লে খালি প্যাকেট দিতে হবে। আমরা এক মাস ধরে আন্দোলন করছি ভ্যাট কমানোর জন্য। এখনো মাঠে আছি। আশা করেছিলাম ড. ইউনূস সরকার এসে আমাদের বিষয়টা দেখবেন, কিন্তু সে আশাও ফিকে হয়ে যাচ্ছে। খাদ্যপণ্য ভ্যাটমুক্ত থাকা দরকার। অথচ, উন্নত দেশ ইংল্যান্ডে খাদ্যপণ্য ভ্যাটমুক্ত।
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, দেশের মধ্যে যারা ভ্যাট দেন তাদের ওপরই এর বোঝা চাপানো হচ্ছে। অথচ, একটা বড় অংশ ভ্যাট নেটের বাইরে। আমাদের নেট বাড়ানো উচিত। একই সঙ্গে অতি প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে ভ্যাট কমানো জরুরি।
বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম বলেন, বিশ্বের প্রতিটি দেশে শুল্ককর বাড়ানোর আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হয়। আমাদের দেশে সেটা হয়নি। বিগত সরকারও করেনি, এ সরকারও করেনি। যখন খুশি তখন ট্যাক্স বাড়িয়ে দেবেন, কোন দেশে বাস করছি আমরা? সেক্ষেত্রে আমাদের ব্যবসায়ী সমাজেরও প্রতিনিধিত্বের ঘাটতি রয়েছে। আমাদের আরও শক্তভাবে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, দেশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি অনেকটা সময় ধরেই চলমান। এটা কমানো সম্ভব হচ্ছে না। গণমাধ্যম থেকে শুনেছিলাম প্রতি রাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেড় কোটি টাকা চাঁদা পেতেন। এখন তো পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু চাঁদাবাজির কি পরিবর্তন হয়েছে, হয়নি। এখনো যাত্রাবাড়ীসহ অন্য বাজারে চাঁদাবাজি হচ্ছে, কারা করছে, এটা বন্ধ করতে হবে। এটা বন্ধ না হলে মূল্যস্ফীতি কমবে না, কারণ পণ্যের দাম বাড়তি থাকবে।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
জেডএ/এমজে