ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোড়াদহ মেলায় ১৫ কেজির মাছ মিষ্টির দাম ৯ হাজার টাকা

কাওছার উল্লাহ আরিফ,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
পোড়াদহ মেলায় ১৫ কেজির মাছ মিষ্টির দাম ৯ হাজার টাকা পোড়াদহ মেলায় ‘মাছ মিষ্টি’ এক ভিন্ন আকর্ষণ/ছবি: বাংলানিউজ

বগুড়া: প্রায় ৪০০ বছরের গ্রামীণ ঐতিহ্যের পোড়াদহ মেলা মাছের জন্য বিখ্যাত। বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ইছামতি নদীর তীরে পোড়াদহ এলাকায় এ মেলার আয়োজন করা হয়।

ঐতিহ্যের পোড়াদহ মেলায় ভোর থেকে দিনব্যাপী মেলার বেশিরভাগ জুড়ে স্থান পায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। বড় বড় মাছের নাম শোনা যায় এ মেলায় আসা নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মুখে মুখে। সেই মাছকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরি করা হয় বাহারি মিষ্টান্ন সামগ্রী। নাম দেওয়া হয় ‘মাছ মিষ্টি’।

মেলায় বাতাসে ঘ্রাণ ছড়ায় এসব মিষ্টির। মাছের পাশাপাশি এসব মিষ্টান্ন সামগ্রী বেচাবিক্রিতেও বেশ সুনাম রয়েছে এ মেলার। পোড়াদহ মেলায় ‘মাছ মিষ্টি’ এক ভিন্ন আকর্ষণ। মেলায় এবার সর্বোচ্চ ১৫ কেজি ওজনের একটি মাছ মিষ্টির দাম হাঁকা হয়েছে নয় হাজার টাকা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় আসা আল-আমিন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে ১৫ কেজি ওজনের এ মাছ মিষ্টির দেখা মেলে। মিষ্টি বিক্রেতা ১৫ কেজির মাছ মিষ্টির দাম চেয়েছেন ৯ হাজার টাকা

জানা গেছে, এ মেলায় নিমন্ত্রণে আসা নতুন-পুরোনো জামাই বাবুরা শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে সাধ্যানুযায়ী পেয়ে থাকেন মোটা অঙ্কের সেলামি। সঙ্গে যুক্ত হয় নিজের জমানো টাকা। এসব টাকায় চলে কেনাকাটার ধুম। কেনাকাটার তালিকায় মাছের পর স্থান পায় রকমারি মিষ্টান্ন সামগ্রী। এর মধ্যে প্রাধান্য পায় মাছের আদলে তৈরি করা ‘মাছ’ মিষ্টি।

বগুড়ার গাবতলীর তরনীর হাট এলাকা থেকে মেলায় আসা নতুন জামাই সুহাইব তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, নতুন বিয়ে করেছেন তিনি। মেলায় জামাই হিসেবে প্রথম আসা তার। তিনি সাড়ে ১৩ কেজি ওজনের একটি কাতল মাছ ১১ হাজার টাকায় কিনেছেন। পাশাপাশি মাছের সঙ্গে মিল রেখে ৫ কেজি ওজনের একটি ‘মাছ’ মিষ্টি কিনেছেন এক হাজার ৪শ টাকায়। মাছ ও মিষ্টি নিয়ে শ্বশুরালয়ে যাবেন তিনি। শ্বশুরবাড়িতে সেই মাছ রান্না হবে ও মাছ-মিষ্টিতে আনন্দ আর উল্লাস চলবে বাড়িতে।

মিষ্টি দোকানি বগুড়া শাজাহানপুর খোট্রাপাড়া এলাকা থেকে আসা আমিনুর, গাবতলী উপজেলার সোনাকানিয়া এলাকার আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, এই ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার পর থেকেই তারা এ মেলায় আসেন। বাহারি ডিজাইনের মিষ্টান্ন সামগ্রীর আমদানি ঘটান। এবারও তার ব্যতিক্রম করেননি। বিপুল পরিমাণ মিষ্টান্ন সামগ্রী নিয়ে তারা মেলায় এসেছেন। বেচাকেনাও বেশ ভালো বলে জানান তারা।



ছোট-মাঝারি ও বড় আকারের ‘মাছ’ মিষ্টি, লাভ মিষ্টি, কদম মিষ্টি, চমচম, হাসিখুশি, কালোজাম, স্পঞ্জ মিষ্টি, ছানার জিলাপি, জিলাপি, লাড্ডু, মুড়িমুড়কি, কদমাসহ নানা রকমের মিষ্টান্ন সামগ্রী রয়েছে মেলায় আসা দোকানগুলোতে। এর মধ্যে বড় আকারের মিষ্টি ২৫০ টাকা কেজি, মাঝারি আকারের সাদা ও কালো মিষ্টি ১৮০ টাকা কেজি, ছোট আকারের মিষ্টি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি, ছানার জিলাপি ২০০-২৪০ টাকা কেজি, পাতা মিষ্টি ২০০-২২০ টাকা কেজি, কদম ২০০-২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

পোড়াদহ মেলায় বাহারি ডিজাইনের কসমেটিকস, খেলনা, গিফট সামগ্রী, চুড়ি, কানের দুল, মালা, কাজল, মেকআপ বক্স, ব্যাট, বল ভিডিও গেমসসহ নানা ধরনের প্রসাধনী ও খেলনা সামগ্রী পাওয়া যায়। এছাড়াও এ মেলায় পাওয়া যায় কাঠের, স্টিল ও লোহার বিভিন্ন আসবাবপত্র। মেলে বাঁশের নানান সামগ্রীও।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫
কেইউএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।