চট্টগ্রাম: আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদীকে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়রি) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়োগের কথা জানানো হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ এর ধারা ৩১(১) অনুসারে আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রস্তাবক্রমে আগামী ৪ বছরের জন্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদীর নিয়োগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও আইআইইউসির চ্যান্সেলর অনুমোদন করেছেন।
আইআইইউসির সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোসতাক খন্দকার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার বরমা ইউনিয়নের পশ্চিম কেশুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
৩৮ বছরের শিক্ষকতা জীবনের সমৃদ্ধ ও বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে তিনি প্রফেসর হয়ে ২০১৮ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত ৩৮ বছর শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিয়োজিত ছিলেন। চবিতে কার্যরত অবস্থায় ড. আজাদী রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলর কর্তৃক চার (৪) বছরের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চবি থেকে লিয়েন ছুটি নিয়ে ২০১৮ সালের ১২ জুলাই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৭ থেকে ড. আজাদী দেশি ও বিদেশি আন্তর্জাতিক বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি থিসিস মূল্যায়নকারী। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক লেভেলে ড. আজাদীই প্রথম হালদা নদীর লিমনোলজি ও রুই-কাতলাব ব্রিডিংয়ের ওপর গবেষণা (১৯৭৭-৭৮) করে ১৯৭৯ সালে চবি থেকে এমএসসি (থিসিস) ডিগ্রি লাভ করেন।
আন্তর্জাতিক কনসাল্টেন্ট, যুক্তরাষ্টের ইউনিভাসিটি অব মেরিল্যান্ডের প্রফেসর ড. চৌ-ফা-চাই এর সুপারভিশনে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রথম নেওয়া 'হালদা নদীর কার্প স্পনিং’র গবেষণা প্রজেক্টে ড. আজাদী গ্র্যাজুয়েট ছাত্র থাকাবস্থায় অংশ নেন। উক্ত প্রজেক্টের হালদা নদীর পানির ভৌত-রাসায়নিক অ্যানালাইসিস অনারারি সম্পন্ন করে দিয়ে হালদা নদীর ভবিষ্যৎ প্ল্যানিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ড. আজাদী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ কাপ্তাই লেকের (৬৮ হাজার ৮০০ হেক্টর) লিমনোলজি ও রুই-কাতলার পপুলেশন বায়োলজির ওপর গবেষণা করে চবির অধীনে ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় এই কাজের উল্লেখযোগ্য অংশ ব্রিটেনের রিভার ল্যাবরেটরি, ইস্টার্ন রিভারস গ্রুপ এবং উইন্ডারমেয়ার ল্যবরেটরিতে সম্পন্ন করেন। ১৯৮৪ সালে ফাও, ইউএনডিপির গবেষণা প্রজেক্টের অধীনে কাপ্তাই লেকের ৪টি নদী থেকেও ড. আজাদী রুই-কাতলার ডিম সংগ্রহ করে প্রমাণ করেন যে হালদা নদী রুই-কাতলার একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র নয়। প্রফেসর আজাদী ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, চীন, ভারত, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম বিভিন্ন দেশে ৮০টির বেশি সেমিনার, ওয়ার্কসপ, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে যোগ দিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
এআর/পিডি/টিসি