খুলনা :খুলনায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত ফুলতলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফারুখ মোল্লার (৪৮)মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার( ১৯মার্চ) রাত ১১টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
ফারুখ মোল্লার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলতলা থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো: শফিকুল ইসলাম।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ফারুক বেলা ১১টার দিকে ফুলতলা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সদর ইউনিয়ন পরিষদে যান। পরে কোনো এক ব্যক্তির ফোন পেয়ে তিনি মোটরসাইকেলে বেজেরডাঙ্গা রেল স্টেশনের দিকে যাচ্ছিলেন। মধ্যডাঙ্গা সাবেক সেনাসদস্য মিজানুরের বাড়ির সামনে আসলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষের দুর্বৃত্তরা তার গতিরোধ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ডান হাত ভেঙে এবং বাম পায়ের রগ কেটে দেয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত জেনে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে গুরুতর অবস্থায় ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ফুলতলা থানার ওসি তদন্ত মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ফারুক মোল্যাকে কুপিয়ে জখমের খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে অচেতন অবস্থায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় তার কোমর থেকে এক রাউন্ড গুলিসহ রিভলবার উদ্ধার এবং অগ্নিসংযোগকৃত মোটরসাইকেলটির আগুন নিভানো হয়। ফুলতলার ৪নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লাকে ২টি হত্যা মামলায় আদালত ৭৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। তবে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার দু’পায়ের এবং মাথায় আঘাত করে। দুর্বৃত্তের অস্ত্রের আঘাতে তার পায়ের রগ কেটে যায়। তার মাথার পেছনের আঘাতটি খুবই গুরুতর ছিল। ওই আঘাতের কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেয়। পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য রাতে তকে আইসিইউ সাপোর্টেড অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। কিন্তু গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলায় পৌঁছালে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। তখন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে সেখানাকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতে তার মরদেহ ফুলতলা উপজেলার পয়গ্রামে নেওয়া হয়।
স্থানীয় ওই সূত্রটি আরও জানায়, নিহত ফারুখ মোল্লা চরমপন্থি দলের সদস্য ছিলেন। তিনি জেলা পুলিশের ৫ নং তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে ফুলতলা থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি স্থানীয় একটি গ্যাংয়ের প্রধান বলে আরও জানা গেছে।
ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ইউপি সদস্য ফারুক মোল্লাকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে জখম করলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে তার অবস্থা অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতে তাকে ঢাকার উদ্দেশে নেওয়া হয়। রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে এমন খবর তিনি জেনেছেন। রাতে তার মরদেহ ফুলতলা উপজেলার পয়গ্রামে তাদের বাড়িতে নেওয়া হয়। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ বা মামলা করা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭০৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৫
এমআরএম/জেএইচ