ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

রাজনৈতিক ইতিহাসে কলঙ্কময় নির্বাচন: বিএনপি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৯
রাজনৈতিক ইতিহাসে কলঙ্কময় নির্বাচন: বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশে আর কখনই নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারবে না অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নজিরবিহীন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও ভোট ডাকাতির এই নির্বাচনের ফলাফল আমরা পুরোপুরিভাবে প্রত্যাখান করছি এবং আমরা মনে করি এই নির্বাচন পুনরায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে করতে হবে। এই সরকার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগসাজস করে যে নির্বাচন করলো এটা জাতির রাজনৈতিক ইতিহাসে কলঙ্কময় হয়ে থাকবে।

সোমবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
 
তিনি বলেন, এই নির্বাচন সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য এই জন্যে যে নির্বাচনের পূর্ব থেকেই বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা যাতে অংশ নিতে না পারে সেজন্য গায়েবি ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়।

এসব মামলায় প্রত্যেকটি আসনে ৩শ’ থেকে ৫শ’ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তারই সূত্র ধরে পুলিশ ভোটের দিন পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে। এসময় প্রায় ২১ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
 
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একরকম নজিরবিহীনভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এ ধরনের নির্বাচন জাতি আগে কখনো দেখেনি। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে একটা যুদ্ধাবস্থা তৈরি করা হয়েছে। এই নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে খালেদা জিয়া ২০১৪ সালের নির্বাচনে না যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল।
 
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন এজেন্ট না আসলে আমি কি করবো- তার এই বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এজেন্টকে তো আসতে দেয়নি। এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ও নির্বাচন কমিশনের যোগসাজসে আমাদের এজেন্টদের যেতে দেয়নি।  
 
তিনি অভিযোগ করেন, এখন যে সমস্যা সেটা হলো নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা। এখন নির্বাচনের পরপরই শুরু হয়েছে সহিংসতা। ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি আক্রমণ করা হচ্ছে। তাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি আক্রমণ করা হচ্ছে। বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
 
বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষক এসেছিল কি না তা আমাদের জানা নেই। কারণ যারা আসতে চেয়েছিল তাদের ভিসা দেওয়া হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুইজনের একটা মনিটরিং টিম পাঠিয়েছে। ভারতীয়রা অফিসিয়ালি কাদের পাঠিয়েছে আমি জানি না। সুতরাং যাদের অবজারভার হিসেবে দেখানো হচ্ছে এটা জাস্ট আইওয়াশ। তারা তাদের স্পন্সরে এসেছিল।
 
‘অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কেন নির্বাচনে অংশ নিলাম। এর জবাবে বলতে চাই আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই নির্বাচনে গিয়েছি। আমরা নির্বাচন কমিশনকে বার বার বলার পরও তারা লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি। আমরা গিয়েছিলাম জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য।

‘পুনরায় নির্বাচন সম্ভব নয়’ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই প্রধান নির্বাচন কমিশনার পক্ষপাতদুষ্ট। প্রথম থেকেই তার বিরুদ্ধে আমাদের আপত্তি ছিল। তিনি একজন দলীয় ব্যক্তি। তার সব কার্যক্রম ইতোমধ্যে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
 
বিএনপি কিভাবে এগোবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে কিভাবে চলবো।  
 
এসময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৮
এমএইচ/টিএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।