ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

সম্মেলন-জনসভা নিয়ে যশোর বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য

সরোয়ার হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫
সম্মেলন-জনসভা নিয়ে যশোর বিএনপিতে প্রাণচাঞ্চল্য দলীয় কর্মসূচির লিফলেট বিতরণ করছেন বিএনপি নেতারা

যশোর: দীর্ঘ ১৩ বছর পর আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি হতে যাচ্ছে যশোর জেলা বিএনপির সম্মেলন।  

এবারের সম্মেলনে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন এক হাজার ৬১৬ জন কাউন্সিলর।

ভোট গ্রহণের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে।  

এর আগে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) যশোর আসছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ওই দিন বিকেল ৩টায় টাউন হল ময়দানে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন।  

এ দুটি বড় কর্মসূচি নিয়ে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। প্রতিদিন চলছে প্রচার-প্রচারণা, প্রস্তুতি সভাসহ মাঠ তৈরির কাজ।

দলের নেতারা জানিয়েছেন, জেলায় স্মরণকালের সব থেকে বড় জনসভা হবে ১৮ ফ্রেব্রুয়ারি। ফ্য্যাসিবাদ পরবর্তী যশোরে প্রথম আসছেন বিএনপি মহাসচিব। তার আগমনকে পাঁচ লাখ মানুষের সমুদ্রে ভাসাতে যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে।

অন্যদিকে ২২ ফেব্রুয়ারির জেলা সম্মেলনেও বিশাল শোডাউন দিতে চায় যশোর বিএনপি। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত থাকবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে নাম রয়েছে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। তবে চারদিনের ব্যবধানে তিনি ফের এ জেলায় আসতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা রয়েছে। যদিও কেন্দ্রের সিনিয়র একাধিক নেতা সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন, এটা নিশ্চিত বলেছেন যশোর বিএনপির শীর্ষ তিনজন নেতা।
জনসভা ও জেলা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে যশোর বিএনপিতে। এ দুটি কর্মসূচি ঘিরে ফুরফুরে হয়ে উঠেছেন নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে জেলার ১৬টি সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।  

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু এবং যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, যশোর জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১২ সালে। এরপর ২০১৯ সালে সেই কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।  

মাঝে করোনার কারণে দুই বছর কমিটির কার্যক্রম স্থগিত থাকলেও ২০২৩ সাল থেকে তা ফের শুরু হয়। তখন থেকেই ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি দল গোছানোর কার্যক্রমও অব্যাহত রাখেন যশোর জেলা বিএনপির নেতারা। এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
জেলার শীর্ষ তিন নেতা আশা করছেন, ১৮ ফেব্রুয়ারির জনসভায় স্মরণকালের সব থেকে বড় জমায়েত হবে যশোরে। একই সঙ্গে ২২ ফেব্রুয়ারির জনসভাতেও কাউন্সিলর, ডেলিগেটটের পাশাপাশি উদ্বোধনী অধিবেশনে ব্যাপক জমায়েত হবে বলে নেতাদের প্রত্যাশা।  

১৮ ফেব্রুয়ারির জনসভা সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। প্রতিটি ইউনিটে প্রস্তুতি সভা হচ্ছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন কমিটির নেতারা গ্রাম-শহরে চালাচ্ছেন ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। মাইকে প্রচারের পাশাপাশি দাওয়াতপত্র হিসেবে দেওয়া হচ্ছে লিফলেট। প্রচার মিছিলে সরগরম করা হচ্ছে শহরগুলো। যাতে শামিল হয়েছে সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনগুলোও।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন তিন সহস্রাধিক ডেলিগেটও। যাদের তালিকা এরই মধ্যে জেলা কমিটির হস্তগত হয়েছে।  

যশোর জেলা সম্মেলনকে সামনে রেখে যেসব ইউনিট পুনর্গঠন করা হয়েছে সেগুলো হলো আট উপজেলা কমিটি, সাতটি পৌরসভা কমিটি এবং একটি নগর কমিটি। প্রতিটি কমিটি হয়েছে ১০১ সদস্যের।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের স্ত্রী বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নার্গিস বেগমই যে এবার সভাপতি হিসেবে আসছেন, তা নিশ্চিত বলা যায়।

তবে সাধারণ সম্পাদক পদে অন্তত চারজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। তারা হলেন- বর্তমান সদস্য সচিব ও যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, বর্তমান যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, বর্তমান সদস্য ও যশোর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান খান এবং বর্তমান সদস্য ও যশোরের সাবেক মেয়র মারুফুল ইসলাম।

এদিকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২২ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নাম ঘোষণা করেছেন।

পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক হয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. ইসহক। সদস্যরা হলেন অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মুকুল, অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন, ডা. এস এম রবিউল আলম এবং সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সজল।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।