ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ মাঘ ১৪৩১, ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে সংকট আরও বাড়বে: শামসুজ্জামান দুদু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫
নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে সংকট আরও বাড়বে: শামসুজ্জামান দুদু জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শামসুজ্জামান দুদু

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, পরিষ্কার কথা, পেটে ভাত থাকতে হবে এবং বেকারদের কাজ থাকতে হবে। যদি মনে করেন, আপনাদের পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়, তাহলে এই মুহূর্তে আনুষ্ঠানিকভাবে মিটিংয়ে বসে দিন-তারিখ ঠিক করে, যারা পারবে তাদের পথ সুগম করেন এবং নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন।

গণতান্ত্রিক রীতিনীতির মতো গণঅভ্যুত্থানের এক নম্বর চাহিদা নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। যদি ব্যবস্থা করা সম্ভব না হয় তাহলে সংকট আরও বাড়তে থাকবে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকারপ্রধান হিসেবে ড. ইউনূসকে আমরা শুধু সমর্থনই দেই নাই, তাঁর গতিপথ যাতে আরও ত্বরান্বিত হয়, আরও সুন্দর এবং চমৎকার হয়, সে ধরনের সহযোগিতা আমরা তাকে করেছি। এখনো করছি, ভবিষ্যতেও করব। তাঁর ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু, তাঁর কাজকর্ম সম্পর্কে ইদানীং বিভিন্ন কথাবার্তা উঠছে।

তিনি বলেন, সরকার সংস্কারের প্রশ্নে খুবই করিতকর্মা। কিন্তু, ছয় মাসের যে সংস্কার, সেই সংস্কার সম্বন্ধে দেশবাসী কিছুটা উদ্বিগ্ন। আমরাও উদ্বিগ্ন। তারা কী করেছে, আমরা জানি না। তবে এতটুকু জানি, বাজার এখনো ঠিক হয়নি। বাজারে যে আগুন জ্বলছিল, সে আগুন এখনো নেভেনি। সিন্ডিকেটকে এখনো ধরা সম্ভব হয়নি।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এ সরকার কী পেরেছে আর কী পারেনি, সেই আলোচনার আগে যদি বলি, তারা শ্রমিককে হত্যা করেছে। এই কথাটা সত্য। হাসিনাও শ্রমিক হত্যা করতো। এ সরকার বিনাবিচারে ক্রসফায়ার বলেন, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং বলেন; হাসিনা যেমন বিএনপির নেতাকর্মীকে খুন করেছে, এই সরকারও কুমিল্লা থেকে খুনের ইতিহাস শুরু করেছে। এটা অস্বীকার করা যাচ্ছে না। শ্রমিক হত্যা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের নেতা হত্যা হয়েছে। পার্থক্যটা কী, এটা যদি কেউ প্রশ্ন করে তাহলে জটিলতা তৈরি হবে। এই কাজের জন্য আমরা আপনাকে (ড. ইউনূস) অভিনন্দন জানাব, তাহলে তো বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। অনতিবিলম্বে দোষী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে মানুষ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মধ্যে জন-অসন্তোষ, বিক্ষোভের সৃষ্টি হবে।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যারা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, সেই ছাত্ররা এখন চিকিৎসা পাচ্ছে না। চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা জাতির জন্য আর দ্বিতীয়টা  হতে পারে না। আপনার বেতনের টাকা, আপনার উপদেষ্টাদের বেতনের টাকা যথাসময়ে যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে, সচিবদের বেতনের টাকা, পুলিশের বেতনের টাকা যদি রাষ্ট্র পরিশোধ করতে পারে—তবে যাদের অস্ত্র এদের পঙ্গু বানিয়েছে, তাহলে হাসপাতালের টাকা কেন পরিশোধ হয় না। চিকিৎসার জন্য তাদের বিক্ষোভ করতে হয় কেন? এমন প্রশ্ন যদি সামনে আসে, তাহলে আমাদের জন্য বিব্রতকর। কারণ, আমরা এই সরকারকে সমর্থন দিচ্ছি। এই জিনিসটা সরকার যদি মাথায় রাখে তাহলে ভালো হবে।

তিনি আরও বলেন, আপনাকে ফুলের মালা দিয়ে আমরা বরণ করেছি। আপনাকে আমরা বিদায় জানাতে চাই ফুলের মালা দিয়ে। সেই পরিস্থিতিটা রাখুন। যেমনভাবে ফুল নিয়ে আপনাদের সামনে গিয়েছি, তেমনিভাবে আপনারা চলে যাওয়ার সময় যেন আপনাদের সামনে যেতে পারি। এই কথাটা আপনি যদি মাথায় রাখেন তাহলে দেখবেন সংকট কেটে যাবে।

নাগরিক সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এম রকিবুল ইসলাম রিপন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ সরদার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২৫
ইএসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।