ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অবরুদ্ধ আ. লীগ নেতাকে বাবার জিম্মায় ছাড়লো পুলিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৯ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
অবরুদ্ধ আ. লীগ নেতাকে বাবার জিম্মায় ছাড়লো পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনকে রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেনের বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ

রাজশাহী: রাজশাহীর সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেনের বাসা থেকে উদ্ধার করে আওয়ামী লীগ নেতা মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনকে তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবালের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। মীর ইকবাল রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

সোমবার (১৯ জুন) সকালে একটি মুচলেকা নিয়ে লিমনকে তার বাবার জিম্মায় দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম।

রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনকে সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। রাত ৯টার দিকে লিমন ওই বাড়িতে ঢুকলে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারা তাকে অবরুদ্ধ করেন।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন ২১ জুন অনুষ্ঠেয় রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার। আর আওয়ামী লীগ নেতা লিমনের মামা আবদুল হামিদ সরকার টেকন এই নির্বাচনে মহানগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর এবং আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী। লিমনের বাবা মীর ইকবাল বর্তমানে রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত হন। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। এছাড়া লিমনের মামা ডাবলু সরকার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ফেব্রুয়ারিতে ডাবলু সরকারের একটি অশ্লীল ভিডিও ফাঁস হলে এবারের রাজশাহী সিটি নির্বাচন থেকে মহানগর আওয়ামী লীগ এই পরিবারটিকে একরকম সরিয়ে রেখেছে।

তাই অভিযোগ রয়েছে, পরিবারটিও ভেতরে ভেতরে নৌকার বিরোধিতা করছে। আর তাই গত রাতে জেলার ঊর্ধ্বতন নির্বাচন কর্মকর্তার ভাড়া বাড়িতে লিমনের যাওয়ার বিষয়টি অস্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন তার দলীয় নেতাকর্মীরা। সেজন্য দলীয় নেতাকর্মীরাই গত রাতে নির্বাচন কর্মকর্তার বাড়িতে তাকে অবরুদ্ধ করেন। পরে রোববার গভীর রাতে বোয়ালিয়া থানার ওসিসহ পুলিশ ও ডিবি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লিমনকে নিজ দলের নেতাকর্মীদের রোষানল থেকে বাঁচাতে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করেন।

লিমন যতক্ষণ অবরুদ্ধ ছিলেন ততক্ষণ পর্যন্ত ওই বাড়ির বাইরে রাস্তায় বসে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেন। তারা লিমনকে গ্রেফতার এবং দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে স্লোগান দেন।

তবে রাতেই এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন। তিনি বলেন, মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমন তার পূর্বপরিচিত। তিনি একটি বিষয়ে কথা বলার জন্য এসেছিলেন। বাসার বাইরে দাঁড়িয়েই তিনি কথা বলতে চাচ্ছিলেন। আমিই তাকে বাসার ভেতরে নিয়ে এলাম। কারণ, আমার বাসায় আমি ছাড়া কেউ থাকে না। কিন্তু লিমন ঢোকামাত্র কিছু ছেলে এসে নানান অভিযোগ তোলেন। বাইরে থেকে তাকে আটকে রাখেন। ঘুষ দেওয়ার জন্য লিমন এসেছিলেন বলে তারা দাবি করেন। তবে এই অভিযোগ সত্য নয়।

আওয়ামী লীগ নেতা লিমন কী বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন জানতে চাইলে আবুল হোসেন বলেন, তিনি জানতে চেয়েছিলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা। আমি বলেছি, নির্বাচন অবশ্যেই সুষ্ঠু হবে; এই আর কী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০২৩
এসএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।