ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জনগণের দাবি না মানলে গণঅভ্যুত্থান কেউ ঠেকাতে পারবে না: সাকি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
জনগণের দাবি না মানলে গণঅভ্যুত্থান কেউ ঠেকাতে পারবে না: সাকি

ঢাকা: সরকার দলের উদ্দেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, আগামীতে ভালোই ভালোই জনগণের দাবি মেনে ক্ষমতা না ছাড়লে আসন্ন গণঅভ্যুত্থান কেউ ঠেকাতে পারবে না।

শুক্রবার (১২ মে) বর্তমান সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সংবিধান সংস্কারসহ ১৪ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

 

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে ছয়টি রাজনৈতিক দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।  

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী আছেন, যিনি নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের চ্যাম্পিয়ন বলেন। তিনি নিজেকে উন্নয়নের মহারূপকার বলেন। বিদেশে নাকি তার প্রশংসায় সবকিছু ভেসে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাই, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি সৌজন্য সাক্ষাৎকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বলে চালিয়ে দিয়েছেন। এটি জাতির জন্য লজ্জাকর। এই হুঁশ তাদের নেই।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে মধ্যরাতে আপনারা (আ. লীগ) ৪০-৫০ ভাগ ভোট আগেই ছাপ মেরে ব্যালট বাক্সে ঢুকিয়ে ফেলেছিলেন। তারপরও বলেন, বিএনপি-জামায়াত ভোট চোর। আওয়ামী লীগ নাকি কারচুপি করে ক্ষমতায় আসেনি। এসব মিথ্যা কথা আপনাদের বলতে হয়।

তিনি আরও বলেন, যদি বড় বড় প্রকল্প করাই একমাত্র উন্নয়নের মডেল হয়, তাহলে আইয়ুব খান ও জেনারেল এরশাদকে আগে সালাম দিয়ে তারপর আপনি (শেখ হাসিনা) উন্নয়নের আলাপ-আলোচনা করুন। মানুষ তাদের কী ইতিহাস তৈরি করেছিল? ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানে আইয়ুব খানের এবং ৯০ এর গণ-অভ্যুত্থানে এরশাদের উৎখাত করা হয়েছিল।

জনগণকে আন্দোলনের প্রস্তটি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, আন্দোলনে আপনাদের নামতে হবেই। এ দেশকে তারা জমিদারি মনে করে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমরা এদেশে জন্মেছি, এ দেশকে আমরা কারো থেকে কম ভালোবাসি না। একজনের, একটি পরিবারের গদি রক্ষার জন্য পুরো দেশকে তারা নিলামে তুলছে। দেশের সার্বভৌমত্বকে তারা হুমকির মুখে ফেলছে। পুরো দেশকে, দেশের মানুষকে বিভাজিত করে নৈরাজ্য, অন্ধকারের দিকে ঠেলছে।

আওয়ামী লীগের নেতাদের মুখ থেকে একটু একটু আপসের কথা আসছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখনো আন্দোলন শুরু হয়নি। মানুষের উত্থান যখন দেখবেন, তখন সমস্ত দাবি মেনে আপস করতে হবে। কিন্তু তখন মানুষ শুনবে কি না সেই গ্যারান্টি আমরা দিতে পারি না। অতএব অভ্যুত্থান থেকে রক্ষা পেতে হলে, জনগণের দাবি মেনে পদত্যাগ করুন।

বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের স্বপ্ন হচ্ছে সরকার ও শাসন ব্যবস্থার বদল। এই স্বপ্নকে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করে কোনো গণআন্দোলন, গণসংগ্রাম গড়ে তোলা যায় না। মানুষের স্বপ্নকে জোরদার করার জন্য ভূমিকা নিন। সেই ভূমিকা রাখলেই গণঅভ্যুত্থান সময়ের ব্যাপার মাত্র। জনগণ রাজপথে নামার জন্য উন্মুখ। সেই উন্মুখ জনগণকে আমাদের নেতৃত্ব দিতে হবে।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২৩
এসসি/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।