ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে আ.লীগ: মায়া

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে আ.লীগ: মায়া

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) বলেছেন, দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে আমরা রাজপথে আছি। সরকারি দল হিসেবে মানুষের জানমাল রক্ষা করা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব।

দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় আগামী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু আদর্শ মূল্যায়ন ও গবেষণা সংসদ।

সরকার দুর্বল বলে বিএনপির কর্মসূচির দিন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দেয়- এমন সমালোচনার জবাবে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আপনারা (বিএনপি) সন্ত্রাস করবেন, আগুন সন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করবেন, গণতন্ত্রকে নষ্ট করবেন, নির্বাচন করতে চাইবেন না, কেউ নির্বাচন করুক-ভোট হোক সেটা কর‍তে দেবেন না, তাহলে কী আমরা ঘরে বসে থাকব? সরকারি দল হিসেবে মানুষের জান-মাল রক্ষা করা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকার সময় ২১ বছর যেভাবে দেশটাকে নষ্ট করেছিল, দেশটাকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, দেশটাকে পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা করেছিল, তারা কিন্তু এখন আবার ওঁৎ পেতে আছে দেশকে পিছিয়ে নেওয়ার জন্য। আগামী নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য তারা নানাভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। দিনে রাজপথে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে, রাতে গোপনে বিদেশিদের নিয়ে আলোচনা করে। একদিকে বিদেশিদের সঙ্গে আলোচনা করা, অন্যদিক আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টি করাই হলো তাদের কাজ।

মানুষ হত্যার জন্য বিএনপি সমাবেশ ও পদযাত্রায় পিস্তল নিয়ে যায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, এখন যদি আপনাদের ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে দেশের মানুষই রাখবেন না। মানুষ কেন, ট্রাক ভর্তি গরু-ছাগলকেও পুড়িয়ে মেরেছেন আপনারা। বাংলার মানুষ আপনাদের বিশ্বাস করে না। আপনারা বিশ্বাসের মানুষও না। আপনাদের সব সময় জনগণ পাহারায় রাখে। আমরা হলাম এই পাহারাদারদের নায়েব, কর্মকর্তা-কর্মচারী। আমরা রাজপথে ছিলাম, থাকব। যেন আপনারা (বিএনপি) কোনো ধরনের কুকর্ম করতে না পারেন, মানুষ হত্যা না করতে পারেন। ভোট ও ভাতের অধিকার যেন আপনারা নষ্ট করতে না পারেন সেজন্য আমরা রাজপথে থাকব।

বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, মরা মানুষ জীবিত হয়। কিন্তু বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না। আইনের মধ্য দিয়েই এটা শেষ হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই এই দেশে নির্বাচন হবে। আমরা (সরকার) তাতে সহায়তা করব।

ভোটের প্রতিযোগিতায় বিএনপি জিতলে আওয়ামী লীগ অবশ্যই ক্ষমতা ছেড়ে দেবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিএনপি যদি কোন রকম টালবাহানা করে, দেশি-বিদেশি চক্রান্ত আর আগুন সন্ত্রাস করে ভোটে জিততে চায় সেটা হবে না। আওয়ামী লীগ সেটা প্রতিহত করবে।

তিনি বলেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া একজন সাদামাটা মানুষ ছিলেন। সব সময় জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে ছিলেন। দুঃসময়ে সাহস দিয়ে নেত্রীকে আগলে রাখতেন। তার ত্যাগের কোনো সীমা নেই। তিনি ছোট-বড় সবাইকে শ্রদ্ধা করতেন।

তিনি আরও বলেন, ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সময়ের ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন। এক মিনিট দেরি করে অফিস যেতেন না। অফিস শেষে আড্ডায় সময় নষ্ট না করে বাসায় চলে আসতেন। সময়ের ব্যাপারে নিয়মতান্ত্রিকতা আমরা ওনার কাছ থেকে শিখেছি।

আজকে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সহযোগিতা পরামর্শ প্রয়োজনীয় ছিল জানিয়ে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কারণ যখনই দেশের ওপর কোনো আঘাত এসেছে, স্বৈরাচাররা গণতন্ত্রকে হত্যার চেষ্টা করেছে, তিনি সোচ্চার ছিলেন। তিনি প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। তিনি কখনো কারো সঙ্গে আপোষ করেননি, খারাপ ব্যবহার করেননি।

বিটিভির সিনিয়র সাংবাদিক সুজন হালদারের সভাপতিত্বে ও বঙ্গবন্ধু আদর্শ মূল্যায়ন ও গবেষণা সংসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহা. রোকন উদ্দিন পাঠানের উপস্থাপনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জি. মো. আবদুস সবুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহম্মেদ, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাড. মো. মোকলেসুর রহমান বাদল প্রমুখ।

বাংরাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩
এসসি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।