সাভার (ঢাকা): ঢাকার ধামরাইয়ে সাবেক ইউপি সদস্য ও স্থানীয় যুবদলকর্মী বাবুল হোসেনকে (৫০) দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার দিনই নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে পিজন ভ্যানে করে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে ধামরাইয়ের কুল্লা ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনিক, শয়ন ও রাতে আশুলিয়া থেকে আয়নালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অনিক ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাখুলিয়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে, শয়ন ধামরাইয়ের পূর্ব কুশিয়ারা গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে ও আয়নাল আশুলিয়ার সিন্ধুরিয়া এলাকার মো. বারেকের ছেলে। তারা মামলার ৯, ১১ ও ১২ নম্বর আসামি।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ধামরাই উপজেলার বড় কুশিয়ারা এলাকার মৃত করম আলীর ছেলে মো. শওকত (৩৮), একই এলাকার সেকেন্দার মৃধার ছেলে মনির (৪০), মৃত কাকছেদ আলীর ছেলে মো. আফসান (৪৪), আন্নেছ আলীর ছেলে মো. রাজীব (৪২), মৃত কাকছেদ আলীর ছেলে আনোয়ার আলী (৪৮), মো. মত্তিছের ছেলে মো. আরিফ (৪০), মাখুলিয়া এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে মো. আরশাদ (৪২), তার ছেলে মো. শরীফ (২৬), একই এলাকার মৃত রহমত আলী রকমতের ছেলে সাইদুর রহমান (৪৮), মৃত আলেফ মিয়ার ছেলে মো. মুনছুর (৪৬) ও মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. আরমান (৫০)।
নিহত বাবুল হোসেন ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাকুলিয়া গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় যুবদলকর্মী এবং কুল্লা ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত শুক্রবার ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে ও চোখ উপড়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পর থেকে তদন্তে নামে পুলিশ। পরে ধামরাইয়ের কুল্লা, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর ও আশুলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তাররা নিহতের স্ত্রীর দায়ের করা হত্যা মামলার ৯, ১১ ও ১২ নম্বর আসামি।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা বেশ কিছুদিন ধরে বাবুল হোসেনসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। গত শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে বাবুল তার স্ত্রীসহ বাড়ি থেকে সামান্য দূরে ধামরাই থানার কুল্লা ইউনিয়নের বড় কুশিয়ারা সংলগ্ন হোম টাউন (গ্রিন সিটি) এর ভেতরের জমিতে সরিষা মারাইয়ের কাজ করছিলেন। এ সময় আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ঘিরে ফেলে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আফসান টেঁটা দিয়ে বাবুলকে পেছন থেকে পিঠে কোপ দেয়। পরে নিহতের স্ত্রী ইয়াসমিন ও তার জা এগিয়ে গেলে তাদেরও এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। আসামিদের কয়েকজন তাদের পেছন থেকে জাপটে ধরে আরশাদ বাবুলকে রামদা দিয়ে কোপ দেয়। এছাড়া আসামি শওকত ধারালো ছ্যাান দিয়া বাবুলকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন। সব শেষে ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু দিয়া আঘাত করে বাবুলের চোখ, গাল ও কপালে মারাত্মকভাবে জখম করে মনির। বাবুলকে হাসপাতালে নিতে গেলে তারা বাধা দেন। পরে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে চলে গেলে বাবুলকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধামরাই থানার পরিদর্শক (ওসি) মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার পরপরই অভিযানে নামে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় ধামরাই ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা
আরবি