চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর গ্রামের ভ্যানচালক আলমগীর হোসেন আলম (৪১) হত্যা মামলার মূল রহস্য উন্মোচন ও হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর্থিক সংকটে থাকায় হত্যা করে ভ্যান ছিনতাই করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে আসামিরা।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- আলমডাঙ্গা শিবপুর গ্রামের সবেদ আলীর ছেলে জিনারুল হক, আলমডাঙ্গা আইন্দিপুর গ্রামের মৃত হাফিজুলের ছেলে ইমরান (২৪) ও আলমডাঙ্গা আইন্দিপুর গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে মাসুম (২০)।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, আলমডাঙ্গা ভালাইপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে আলমগীর হোসেন পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। গত ২ অক্টোবর রাতে মোটরচালিত পাখিভ্যান নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি। ফিরে না আসায় আলমগীরের মোবাইল ফোনে কল দিলেও মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে গত ৪ অক্টোবর সকালে আইন্দিপুর গ্রামের ছাতিয়ানতলা মাঠে ভাইমারা খালে কচুড়িপানার নিচে আলমগীরের মরদেহ দেখতে পায় আলমগীরের পরিবার।
এ ঘটনায় আলমগীরের মা জহুরা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে। গত ২০ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি থানার বড়দল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমরান ও মাসুম নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর বুধবার (১১ডিসেম্বর) ঘটনার সঙ্গে জড়িত হোতা জিনারুল হককে মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের আদালতে সোপর্দ করলে আসামিরা আদালতে স্বেচ্ছায় দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
আসামিরা জানায়, তারা তিনজন আর্থিক সংকটে থাকায় ভ্যান ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা ভালাইপুর থেকে ৩ হাত নাইলনের রশি কিনে আলমগীরের ভ্যান ভাড়া নিয়ে বড়গাংনীর উদ্দেশে রওনা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভ্যান থামাতে মাসুম ইচ্ছাকৃতভাবে তার পায়ের স্যান্ডেল ফেলে দেয়। ভ্যান থামালে জিনারুল চালকের জামার কলার ধরে নিচে নামিয়ে ধস্তাধস্তি করে গর্তে ফেলে দেয়। একপর্যায়ে নিস্তেজ হয়ে পড়লে তার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা নিশ্চিত করে। এরপর মরদেহ রাস্তা পার করে খালের কচুড়িপানার নিচে লুকিয়ে রাখে। ছিনতাই করা পাখিভ্যানটি ৪৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে তিনজন প্রত্যেকে ১৬ হাজার টাকা করে সমান ভাগ করে নেয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২৪
জেএইচ