ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত 

সিলেট: উজানে ভারী বর্ষণ না হওয়ায় সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কমে এসেছে বন্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।

 

সিলেট জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, শনিবার (১ জুন) বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ৩৩ জনে। এর আগে শুক্রবার (৩১ মে) পর্যন্ত জেলায় বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৪৭০ জন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ভারী বৃষ্টি না হওয়াতে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে জেলার সার্বিক পরিস্থিতির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারিভাবে শুকনো, রান্না করা খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ গণমাধ্যমকে বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যেও বৃষ্টির পরিমাণ কমেছে। যে কারণে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর তিনটি পয়েন্ট ছাড়া জেলার অন্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে।

তিনি জানান, সুরমা নদী সিলেট শহর পয়েন্টে বিপৎসীমার সাত সেন্টিমিটার এবং কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সীমান্ত উপজেলা জকিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এখনো ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে অন্তত ১৫০ পরিবার রয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজনকে রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট এলাকার বিস্তৃর্ণ অঞ্চল থেকে বন্যার পানি কমছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, সিলেট সিটি করপোরেশনের নয়টি ওয়ার্ড, ছাড়াও সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন, জৈন্তাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন, গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন, কানাইঘাট উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন, জকিগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন, বিয়ানীবাজার উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার দুটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।  

সিটি করপোরেশনের নয়টি ওয়ার্ডসহ জেলার বন্যাকবলিত আটটি উপজেলার মোট ৬৮টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের ৭৮১টি গ্রাম বন্যা প্লাবিত হয়েছে। বন্যা আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ৬ লাখ ৯ হাজার ৩৩ জন। বন্যা দুর্গতদের জন্য পুরো জেলায় ৫৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩ হাজার ৩৪২ জন মানুষ আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ইউনিয়নভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

এদিকে উজান থেকে ভাটির দিকে পানি নামতে শুরু করায় সিলেট মহানগর, সদর, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলাসহ অন্যান্যা উপজেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে, নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসন।

সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে,  এ যাবত বন্যা আক্রান্ত মানুষের জন্য ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও চারশ মেট্রিক টন চাল, এক হাজার দুইশ ৫০ বস্তা শুকনা খাবার নয় লাখ টাকার শিশু খাদ্য,  নয় লাখ টাকার গোখাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে বেশি দুর্গত কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও জকিগঞ্জে দুই দফায় ৪০ টন করে চাল ও দেড় লাখ টাকা করে এবং দুইশ প্যাকেট করে শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিম্নাঞ্চল প্লাবিত আরও আটটি উপজেলায় ২৫ টন করে চাল, এক লাখ টাকা এবং ৫০ প্যাকেট করে শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০২৪
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।