ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবনে আগুন: কিছু জায়গায় এখনও ধোঁয়া, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪১ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৪
সুন্দরবনে আগুন: কিছু জায়গায় এখনও ধোঁয়া, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস

ঢাকা: সুন্দরবনে লাগা আগুন তৃতীয় দিনেও পুরোপুরি নির্বাপিত হয়নি। সোমবার (৬ মে) ভোর থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়েছে।

কিছু জায়গায় এখনও ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর।

সংস্থাটি থেকে এও জানানো হয়, আগুনের ঘটনার কারণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে। সোমবার ভোর থেকে বনে আগুন নির্বাপণের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

দুপুরে সংস্থাটির সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাজাহান সিকদার এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণের কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুরোপুরি নির্বাপণের ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, ছয়টি ফায়ার পাম্পের মাধ্যমে ভোলা নদী থেকে পানি নিয়ে পুরোপুরি ফায়ার ব্রেকের জন্য আর্টিফিশিয়াল ওয়াটার ক্যানেল তৈরি করা হয়েছে। ১১৯টি হোস পাইপে বারোটি ডিভাইডিংয়ের মাধ্যমে ম্যানুয়ালি অ্যাকটিভ ফায়ারফাইট করা হয়েছে। স্টারভেশন পদ্ধতি অনুসরণ করে বিচ্ছিন্ন আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আগুন যেন চারদিকে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ফগ ও জেট সিস্টেম করে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা কুলিং করা হয়।

তিনি আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের ৫৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের অন্তত ৪০, বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ৩০, জেলা পুলিশের ৩০ জন ও ভলান্টিয়ারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী আগুন নেভানোর কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুন্দরবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বনের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার চারপাশে সব সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে আর কোনো আগুনের ফ্লেম পাওয়া যায়নি। কিছু জায়গায় এখন সাধারণ ধোঁয়া বিদ্যমান। সেটি সম্পূর্ণ নজরদারিতে ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বনের সমস্ত জায়গায় অতিমাত্রায় ঘন জঙ্গল, মরা শুষ্ক পাতা, গাছের শুষ্ক বাকল ও প্যাঁচানো ডাল-পালা। জীবজন্তুর ভয় এবং গাছ-পালা বেষ্টিত অতি ঘন বনের জন্য ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নেওয়া যাচ্ছে না। অগ্নিনির্বাপণের দূরবর্তী নদী ছাড়া পানির কোনো উৎস নেই। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সব ইকুইপমেন্ট হ্যান্ড ক্যারি করে সুন্দরবন এলাকায় নেওয়ার পর নৌকায় স্থাপন করে আগুন নির্বাপণের কাজ চলছে। পানির উৎস থেকে আগুনের দূরত্ব স্থানভেদে ২ থেকে আড়াই কিলোমিটার। রাস্তায় অতিরিক্ত শ্বাসমূল ও ঘন জঙ্গল থাকায় অগ্নিনির্বাপণকালীন স্বাভাবিক চলাচল কষ্টসাধ্য বলেন শাজাহান সিকদার।

সর্বশেষি তিনি জানান, আগামী দুই তিনদিন গ্রাউন্ড অ্যানালাইসিস ও ড্রোন দ্বারা তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ করা হবে। অগ্নিনির্বাপণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা একইভাবে মোতায়েন থাকবেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার গুল্মলতা ও গাছের বাকল পুড়ে গেছে। তবে সম্পূর্ণ গাছ পুড়ে যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট ও আঞ্চলিক সাধারণ মানুষের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পুনরায় সবুজায়ন সম্ভব হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২৪
এজেডএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।