ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়, শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪০ ঘণ্টা, মে ৩, ২০২৪
বান্দরবানে কালবৈশাখী ঝড়, শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত 

বান্দরবান: বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলায় আঘাত হেনেছে কালবৈশাখী ঝড়।

বৃহস্পতিবার (২ মে) মধ্য রাতে হঠাৎ লামা ও আলীকদম উপজেলার  বিভিন্ন ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকশত ঘরবাড়ি।

ভেঙে গেছে বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের খুঁটি। এছাড়া ফসলি জমি ও ফলের বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক কৃষকের।

এদিকে লামা উপজেলায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হলেও কালবৈশাখী ঝড়ের আলীকদম উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়নি, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অধিকাংশ খোলা ছাদের নিয়েছে বসবাস করছেন।

লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মো সাজ্জাদ সিদ্দিক জানান, ১ মে ভোরে ঝড়ে বাতাসে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১১কেভি সঞ্চালনের ১৭টি খুঁটি ও ৩৩ কেভি সঞ্চালনের ১টি খুঁটি ভেঙে যাওয়াতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, শুক্রবার (২মে) সকালে মেইন লাইন চালু করে লামা হাসপাতাল ও শহর এলাকায়  বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লাইনঝিড়ি হতে ছাগলখাইয়া, লামা আলীকদম সঞ্চালনের ১১ কেভি লাইনটি প্রায় দেড় কিলোমিটার বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ায় আলীকদমে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। বিদ্যুতের লাইন স্বাভাবিক করতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।  

দু-একদিনের মধ্য লামা ও আলীকদমের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

লামা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ১ মে ও ২ মে প্রচুর ঝড়ো হাওয়া ও তার সঙ্গে বৃষ্টির কারণে লামা উপজেলায় ২০৫টি ঘর সম্পূর্ণ, ৬১০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় ২ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়েছিল সেগুলো পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে রেড ক্রিসেন্টের সদস্য স্থানীয়রাসহ বিভিন্ন জনসাধারণ মিলে পরিষ্কার করেছে।

তিনি আরও জানান, জেলা প্রশাসন থেকে শুক্রবার (৩ মে) দশ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গুদামে কিছু ঢেউটিন ছিল সেগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।  

সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৫ কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

লামা পৌর মেয়র মো.জহিরুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড়ে লামা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, পৌর এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষণিক চাল ও আর্থিক বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তার সঙ্গে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকেও বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেগুলো সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করা হচ্ছে।

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করতে বান্দরবান জেলা সদর থেকে লামা উপজেলা গেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। শুক্রবার (৩ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় লামা পৌরসভার লাইনঝিরি এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে চাল ও ঢেউটিন বিতরণ করা হয়।  

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ও লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৭ ঘণ্টা,  মে ০৩, ২০২৪
এসএএইচ 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।