ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ছেলের মাদকসেবী দুই বন্ধু বৃদ্ধাকে ধর্ষণ-হত্যা করে, মাটিচাপা দেয় ঘরেই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
ছেলের মাদকসেবী দুই বন্ধু বৃদ্ধাকে ধর্ষণ-হত্যা করে, মাটিচাপা দেয় ঘরেই

বরিশাল: বরিশালের বাকেরগঞ্জে নিজ ঘরের মধ্যে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় রিজিয়া পারভীন (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। তারা বলছে, ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ ও হত্যার পরে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

এতে অভিযুক্ত তার ছেলের মাদকাসক্ত দুই বন্ধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ (এসপি) সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম নগরের পলিটেকনিক রোডে তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তার অভিযুক্ত দুজন হলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার মধ্য কাটাদিয়া গ্রামের মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে ফয়সাল (২৫) ও একই গ্রামের বাসিন্দা মৃত কালু হাওলাদারের ছেলে লাল চাঁন (৩২)।

ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার রিজিয়া পারভীন চরামদ্দি ইউনিয়নের কাটাদিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল গাজীর স্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ঈদের ছুটিতে ছেলে রাসেল গাজী বাড়িতে এসে মাকে না পেয়ে ঘরের মেঝেতে মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া কিছু দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে রাসেল গাজীর মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার বলেন, হত্যার রহস্য উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। বাকেরগঞ্জ থানা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ র‌্যাবের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে তিন দিনের মধ্যে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সুপার জানান, দুই হত্যাকারী বৃদ্ধার ছেলে রাসেলের বন্ধু। রাসেল ও দুই অভিযুক্ত মাদকাসক্ত। তারা বৃদ্ধার ঘরে বসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলতেন। রাসেলের বিরুদ্ধে মাদকের মামলা রয়েছে। মামলার কারণে তিনি গ্রাম থেকে চলে যান। কিন্তু ফয়সাল ও লালচাঁন ঘরে এসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলতেন। ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে ফয়সাল ও লালচাঁন জোরপূর্বক ঘরে ঢোকেন। পরে ফয়সাল তার বন্ধু লালচাঁনের সহযোগিতায় ওই বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে হত্যা করেন। এরপর ঘরের মেঝের মাটি খুঁড়ে তার মরদেহ চাপা দিয়ে রাখেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় হত্যার বিষয়টি জানতে পারেননি রাসেল। ঈদে তিনি বাড়ি না এলে বিষয়টি প্রকাশ হতো না। অবশ্য মরদেহ উদ্ধারের পর রাসেলকেও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। স্থানীয়দের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আমরা জানতে পারি, ছয় মাস আগে ফয়সাল ঘরের মালামাল বিক্রি করে চলে গেছেন। পরিবারের সঙ্গেও তার যোগাযোগ নেই। এ সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে তাকে ও পরে লালচাঁনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরও জানান, বৃদ্ধার ভাই হুমায়ুন মাসউদের করা মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।