মাদারীপুর: মাদারীপুরে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরের দরজা ভেঙে মিলল স্বামীর ঝুলন্ত লাশ।
নিহতের নাম সুব্রত পালকে।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) মধ্যরাতে জরুরিসেবা ৯৯৯ -এ কল পেয়ে মাদারীপুর পৌরসভার কুকরাইল এলাকার কাতারপ্রবাসী রাশেদ মাতুব্বরের বাড়িতে যায় পুলিশ। তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি কক্ষের দরজা ভেঙে সুব্রত পালের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তারা।
পরিবারের দাবি, মুক্তিপণের ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে সুব্রতকে হত্যা করা হয়েছে। সুব্রত’র দ্বিতীয় স্ত্রী মিতালী বাড়ৈকে অভিযুক্ত করেছেন তার প্রথম স্ত্রী চম্পা।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত মিতালী বাড়ৈ ও তার মা মিনা বাড়ৈকে আটক করেছে পুলিশ।
মিনা বাড়ৈ মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার চৌরাশি গ্রামের জগবন্ধু বাড়ৈর মেয়ে।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে মোবাইলফোনে সুব্রত পালের সঙ্গে পরিচয় হয় মিতালীর। পরে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে খোরপোষের চুক্তিতে ৫০ লাখ টাকা ধার্য করে বিয়ে হয় তাদের।
অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার সুব্রতকে মোবাইলফোনে কল দিয়ে মাদারীপুরে ডেকে আনেন মিতালী। পরে দুদিন শহরের কুকরাইল এলাকার ওই বাসায় সুব্রতকে আটকে রেখে করা হয় মানসিক নির্যাতন। আগের বিয়ে গোপন রেখে সুব্রত দ্বিতীয় বিয়ে করায় পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে মোবাইলফোনে চাওয়া হয় চুক্তির সেই ৫০ লাখ টাকা। সেই টাকা দিতে না পারায় আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার।
স্বজনদের অভিযোগ, মুক্তিপণের টাকা না দেওয়ায় মেরে ফেলা হয়েছে সুব্রতকে। এই ঘটনায় দোষীদের বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত সুব্রত’র প্রথম স্ত্রী চম্পা বাড়ৈ বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পনা করে মেরে ফেলা হয়েছে, এই ঘটনার বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার রাতে কয়েকবার স্বামীর সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। বার বার বলছিলেন ৫০ লাখ টাকা ম্যানেজ করে নিয়ে আসতে। টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলবে। যতবার কথা হয়েছে, ততবারই ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড কথা হয়। এরপর স্বামীর মোবাইলফোন কেড়ে নেয় মিতালী ও তার সাথে থাকা লোকজন।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে নিহতের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার সকালে মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০২৪
এসএএইচ
