ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

খুলনায় মানবপাচার চক্রের তিন নারীসহ ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০২৪
খুলনায় মানবপাচার চক্রের তিন নারীসহ ৬ সদস্য গ্রেপ্তার

খুলনা: খুলনায় মানবপাচার চক্রের মূলহোতাসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরা হলেন, মিল্টন মন্ডল (৪০), সাইফুল ইসলাম (২১), হিমেল (২১), খাদিজা বেগম (২২), রত্না আক্তার ওরফে পায়েল (২০) ও রাবেয়া বেগম (২০)।

মঙ্গলবার (৬ মার্চ) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সম্মেলনকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, সোমবার রাতে লবণচরা থানা পুলিশের একটি টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ নগর এলাকার রাজা সাহেবের রাইস মিল সংলগ্ন আদিলুজ্জামান সড়ক দ্বিতীয় লেনের শেখ মিজানুর রহমানের দোতলা বাড়ির নিচতলা থেকে সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি দুই তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।

এসময় জানা যায়, আসামিরা ভিকটিমদের দুই মাস আগে যাত্রাপালায় গানবাজনা এবং অভিনয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ডেকে নিয়ে আসে এবং ভিকটিমদের নগ্ন ছবি ধারণ করে তাদের জোরপূর্বক আটক রেখে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য করে। তারা অনৈতিক কাজে লিপ্ত না হলে তাদের নগ্ন ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে এহেন জঘন্য কাজ করতে বাধ্য করে। এছাড়া সেখানে রাতের বেলায় আসামিরা ডিজে পার্টিসহ আগতদের মনোরঞ্জনে রঙিন আলোয় নাচ-গানের ব্যবস্থা করে থাকে। ভিকটিমরা বাধ্যতামূলক যৌনতায় ও নাচ-গানে অস্বীকৃতি জানালে তাদের শারীরিকভাবে ‌নির্যাতন করা হতে থাকে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতে থাকে। তারা ভিকটিমদের এভাবে ফাঁদে ফেলে দীর্ঘদিন ধরে বাধ্যতামূলক যৌনতাবৃত্তি করাচ্ছিল এবং ভারতের কলকাতা, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও সুরাটসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে বিপুল অর্থ লাভ করছিল। অভিযানকালে সেখানে যৌন উত্তেজক ওষুধসহ সেক্স টয় টাইপের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি পাওয়া যায়।

গত ৫ মার্চ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ‘হ্যালো কেএমপি’ অ্যাপসের ইনবক্সে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তির গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, মানবপাচার চক্রের কতিপয় ব্যক্তি দুইজন ভিকটিমকে পাশের দেশ ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে শেখ মিজানুর রহমানের বাড়িতে আটকে রেখে যৌনকর্মে বাধ্য করছে। এ সময় আরও জানা যায়, দুই মাস যাবত বিভিন্ন জায়গায় যাত্রাপালায় গানবাজনা এবং অভিনয়ের কথা বলে ভিকটিমদের নিয়ে গেলেও তাদের যাত্রাপালায় গানবাজনা এবং অভিনয় করতে দেওয়া হয়নি। প্রকৃতপক্ষে দালালের মাধ্যমে পার্টি ঠিক করে বাধ্যতামূলক যৌনতার উদ্দেশ্যে মোটা অংকের টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার জন্য এই কালক্ষেপণ করা হয়।

গত ২ মার্চ সকাল ৯টার দিকে মিজানুর রহমানের বাসায় এনে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন লোকজনের সঙ্গে আসামিরা কথাবার্তা বলে ও দামদর পাকা করে। আসামিরা ভিকটিমদের যৌনকর্মে জোরজবরদস্তি করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক করে রাখে। পরে সোমবার রাতে আসামিরা ভিকটিমদের ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে দালালের নিকট হস্তান্তর করবে বলে পরিকল্পনা করছিল।

আসামিরা মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২ এর ৭/১০/১১ ধারায় অপরাধ করেছেন বিধায় তাদের বিরুদ্ধে সোমবার লবণচরা থানায় মামলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৪
এমআরএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।