ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ছোট ভুলে সারা দেশে কর্মকর্তারা যেন বিব্রত না হন, ডিসিদের মন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০২ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২৪
ছোট ভুলে সারা দেশে কর্মকর্তারা যেন বিব্রত না হন, ডিসিদের মন্ত্রী জনপ্রশাসনমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন

ঢাকা: অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে জেলা প্রশাসকদের মনিটরিং বাড়ানোর পাশপাশি দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে তাদের ভালো গুণ অধীনস্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, তাদের একটি ছোট ভুলের জন্য যেন বিব্রত না হতে হয়।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের তৃতীয় দিন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কার্য-অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যেন তার অধীন কর্মকর্তারা শিখতে পারেন, কীভাবে প্রশাসন চালাতে হয়, ম্যানেজিরিয়াল কাজের দক্ষতা, আচরণগত যে বিষয় আছে…আমরা বলেছি আপনি একজন অভিভাবক, প্রশিক্ষক, মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন। আপনার যে ভালো গুণ আছে সেগুলো তুলে ধরা। দেশপ্রেম, মানবিকতা থাকবে। মানুষ যারা সেবা নিতে আসবে তাদের যথেষ্ট মর্যাদা-সম্মান দিয়ে করতে হবে।

মাঠ প্রশাসন নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মাঠ প্রশাসনের শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের বিভাগীয় কমিশনাররা নিবিড়ভাবে জেলাগুলোকে দেখেন। সেক্ষেত্রে যদি আমাদের মাঠ প্রশাসনের বিভাগীয় জায়গায় আরও জনবল বাড়াতে হয়, অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন হয়, সেটা ভবিষ্যতে করবো।

‘আমরা সতর্কও করে দিয়েছি যে ছোট ভুলের জন্য সারাদেশে কর্মকর্তারা যেন বিব্রত না হন, সে বিষয়টি সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ’

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, জেলা প্রশাসকেরা আমাদের কাছে ১৩টি প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে আরও ১২টি প্রশ্ন তারা করেছেন। একজন ডিসি বলেছেন, আমাদের হাসপাতালে যে ডোম থাকে, একটা লাশ কাটার জন্য মাত্র ৬৫ টাকা দেওয়া হয়। তাদের টাকাটা বাড়ানোর বিষয়টি যৌক্তিক বিষয়। একজন ডোম থাকেন এবং তিনি পুরুষ। লাশ যখন নারী আসে তখন তার জন্য নারী ডোম থাকার প্রয়োজন আছে। আমরা বলেছি যে বিষয়টি অবশ্যই দেখবো যে কীভাবে বাড়ানো যায়। সার্কিট হাউজে নৈশপ্রহরীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।

এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের পর প্রথম জেলা প্রশাসক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাদের কাছে প্রধানমন্ত্রী খুব চমৎকারভাবে বার্তা দিয়েছেন। আমরা আলোচনা করেছি মানসম্মত সেবাটা কীভাবে নিশ্চিত করতে পারি। আমরা চাচ্ছি সেবার মান আরও কীভাবে বাড়াতে পারি।

অভিযোগের জায়গাগুলো পয়েন্ট আউট করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচের তলায় বিআরটিএর অফিস আছে এবং সে অফিসে দুর্নীতি আছে, জেলা প্রশাসক জানেন না। আমি বলেছি যে প্রত্যেকটা বিষয় আমাদের খোঁজখবর রাখতে হবে। আমাদের মনিটরিং বাড়াতে হবে। যে জায়গাগুলোতে অভিযোগ আছে সেই জায়গাগুলোয়।

তিনি বলেন, আমরা তাদের বলেছি যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমাদের পরিদর্শন আরও বাড়াতে হবে, যাতে করে আমাদের লেখাপড়ার মান আরও উন্নত করতে পারি। মফস্বল এবং ইউনিয়ন, গ্রাম সব জায়গায়। হাসপাতালে পরিদর্শন বাড়াতে হবে। আমরা দেখেছি জেলা প্রশাসনের কার্যালয় একটা পৌরসভার মধ্যে, কিন্তু পৌরসভার রাস্তার দুই ধারে ইট বা বালু রেখে দিয়েছে যাতে করে দুর্ঘটনা ঘটছে। এগুলো যেন আমরা আরও বেশি খেয়াল করি। আমাদের জেলা প্রশাসক যারা আছে তাদের বলেছি যে, আমাদের এখতিয়ারভুক্ত যে কাজ আছে তাতে আরও নিবিড়ভাবে কীভাবে সদিচ্ছা দেখাতে পারি এবং কাজগুলোকে মানসম্মত সেবা দেওয়ার মধ্য দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।

মন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার যথাযথভাবে যাতে বাস্তবায়ন করতে পারি এবং বিশেষ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা... কর্মসংস্থানের জন্য ভূ-প্রকৃতি অনুযায়ী প্রকল্প নিতে হবে। অযথা কোনো প্রকল্প না, যেগুলো আমাদের প্রয়োজন সেই প্রকল্প নিতে হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য আরও বেশি চিন্তা-ভাবনা করা, সেগুলো আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।

রেস্টেরেন্টে আগুন ও নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, একটা রেস্টুরেন্টে ১০-২০টি চুলা আছে। ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকে না। অনুমতি দেবেন বুঝে-শুনে। সেফটি অ্যান্ড সিকিউরটি শতভাগ করতে হবে।

তিনি বলেন, মার্চ-এপ্রিলে অগ্নিকাণ্ড বেশি ঘটে। এখন থেকে আমাদের সতর্কতা প্রয়োজন। আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। কোনো কাস্টমার যদি কোথাও গিয়ে দেখেন যে সেখানে ঝুঁকি আছে, তারা যেন ৯৯৯ বা ৩৩৩-তে ফোন দেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানান, তখন আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

রাজনৈতিক সংকটের কারণে কেউ কেউ কাজ করতে পারে না- প্রশ্নে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের কাজের সঙ্গে আমাদের রাজনীতিবিদের কাজের কোনো জায়গায় সাংঘর্ষিকতা নেই। তবে আমরা বলেছি কোনো জায়গায় সমস্যা হলে তারা বিভাগীয় কমিশনারকে জানাবেন, সমাধান না হলে আমাদের সঙ্গে বা জনপ্রশাসনের সঙ্গে আলাপ করবেন। আমরা যথাযথভাবে সমাধান দিতে পারবো। এই খবরগুলো এখন আর পাওয়া যায় না। এখন জেলা প্রশাসক এবং রাজনীতিবিদদের অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২৪
এমআইএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।