ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বৃষ্টি খাতুনের বাড়িতে শোকের মাতম, পাগলপ্রায় মা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৪
বৃষ্টি খাতুনের বাড়িতে শোকের মাতম, পাগলপ্রায় মা

কুষ্টিয়া: বেইলি রোডে ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর (বৃষ্টি খাতুন) মৃত্যুর খবরে পাগলপ্রায় তার মা বিউটি বেগম।

অভিশ্রুতির আসল নাম বৃষ্টি খাতুন।

তার বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায়। তিনি ঢাকায় নিজেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচয় দিতেন। যদিও জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব কাগজপত্রে তার নাম বৃষ্টি খাতুন। তবে ইডেন মহিলা কলেজের ক্রেস্টে তার নাম লেখা অভিশ্রুতি বৃষ্টি।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি পরিবারের বড় মেয়ে। বিউটি বেগমের তিন মেয়ের মধ্যে বৃষ্টি খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি বড়, মেজো মেয়ে ঝর্ণা এবং ছোট মেয়ে বর্ষা। অভিশ্রুতি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে স্নাতক পড়েছেন। বিসিএস কোচিং নিয়েও ব্যস্ত ছিলেন। এর পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন।

ঢাকায় বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে মেয়ের মৃত্যুর খবর গ্রামে পৌঁছানোর পর পরই অভিশ্রুতির বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।  

মেয়ে মারা গেছে জেনেও সাংবাদিক মেয়ের সঙ্গে কথা বললে হন্যে হয়ে নিজের মোবাইল ফোন খুঁজছেন মা বিউটি বেগম। কখনো ফোনের জন্য চিৎকার করে সারা বাড়ি মাথায় তুলছেন। ফোনকল পেলেই ঢাকায় মেয়ে বৃষ্টি খাতুনের কাছে ছুটে যাবেন। ছোট মেয়ে বর্ষা মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে।  

প্রতিবেশীরাও শোকে পাথর হয়ে গেছেন। নিহতের মাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন প্রতিবেশীরা।  

গ্রামের বাড়িতে দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছোট মেয়ে বর্ষাকে নিয়ে থাকেন বিউটি বেগম। অভিশ্রুতির বাবা শাবলুল আলম সবুজ ঢাকায় একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন।

বৃষ্টির মেজো বোন ঝর্ণা জানান, অভিশ্রুতি বৃষ্টি নামে ফেসবুক একটি আইডি চালাতেন বৃষ্টি। এছাড়া তিনি কখনো অন্য ধর্ম গ্রহণ করার কথা বলেননি। ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য তিন মাস আগে বাড়ি এসেছিলেন।

নিহতের ছোট বোন বর্ষা জানায়, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার ফোনে কথা হয়। বৃষ্টি সাংবাদিকতা করলেও বাড়ি থেকে মা টাকা পাঠাতেন।

বৃষ্টির চাচা জোয়াদ আলী জানান, ঢাকায় ছোট চাকরি করে দুই মেয়েকে বাইরে রেখে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছেন বাবা সবুজ। গত ঈদেও বাড়ি এসেছিলেন বৃষ্টি। সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ করেছেন।

বনগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, ২০১৬ সালে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেন বৃষ্টি। স্বাধীনচেতা ছিলেন। ছোটবেলা থেকে তিনি সরকারি বড় চাকরি করার স্বপ্ন দেখতেন।  

একই গ্রামের বাসিন্দা খোকসা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আখতার জানান, বৃষ্টির বাবাকে আমি আগে থেকেই চিনি। তার তিন মেয়ে তাও জানি। কিন্তু নামের পরিবর্তন বা অন্য ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে কখনো শুনিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।