ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বসন্ত-ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত খুলনা

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
বসন্ত-ভালোবাসায় উচ্ছ্বসিত খুলনা

খুলনা: আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে...’ কবিগুরুর এ গানের সুর এখন বাজছে প্রকৃতিতে। সেই সুর ঢেউ তুলেছে রূপসা পাড়ের খুলনায়।

বসন্ত বরণ উৎসবের পাশাপাশি বাড়তি বিশেষণ যোগ করছে ভালোবাসা দিবস। নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের ঋতু ভিত্তিক উৎসব ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও খুলনার বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আয়োজন করেছে বসন্ত বরণে।

পয়লা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে হলুদ পাঞ্জাবি, বাসন্তী শাড়ি পরে, হাতে-খোঁপায় ফুল নিয়ে তরুণ-তরুণীরা মেতেছে উচ্ছ্বাসে।

ভালোবাসার ভাবাবেগে আকুল তরুণ–তরুণীরা ঘুরতে বেরিয়েছেন জুটি বেঁধে। উপহার দিয়েছেন পরস্পরকে। ফুলের দোকানগুলোয় চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, তরুণ-তরুণী, নব বিবাহিতরা লাল শাড়ি লাল পাঞ্জাবি করে বের হয়েছেন। এর মধ্যে আবার একদল বের হয়েছে বাসন্তী রঙের শাড়ি পাঞ্জাবিতে। হোটেল রেস্টুরেন্ট ও খাবারের দোকানে, পার্কগুলোয় বিশেষ দিন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি স্থানেই প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন মানুষ।

খুলনা প্রেস ক্লাবের শহীদ আবু নাসের ব্যাংকুয়েট হলে বসন্ত মেলায় দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসেছেন বসন্ত বরণ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায়। বাহারি সাজে সেজেছেন তারা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) বাংলা ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে বসন্ত বরণ করা হয়। এ উপলক্ষে সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে ঋতুরাজ বসন্তকে স্বাগত জানিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।

পরে অদম্য বাংলা চত্বরে বসন্ত বরণে প্রভাতী নিবেদন ‘আবহমান বাংলা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটক মঞ্চায়ন করা হয়। অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল- কবিতা, সঙ্গীত ও নৃত্য এবং ‘যৈবতী কন্যার মন’ নাটক মঞ্চায়ন।

অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফাহমিদা নাহিন ঐন্দ্রিলা বাংলানিউজকে বলেন, ক্যালেন্ডারের পাতায় যেমন শীত পেরিয়ে বসন্তের আগমন, তেমনি আবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবসও। এ যেন সব মিলেমিশে একাকার, যেন বলতেই হয়..ভালোলাগা, ভালোবাসার এক মিলনদিন৷ সবমিলিয়ে প্রাণে প্রাণ মেলানো উৎসব৷ বাংলার আবহমান সংস্কৃতির এক বিরাট অংশকেই যেন পূর্ণতা দেয়। আমাদের মতো তরুণ-তরুণীদের কাছে এ যেন এক সাজ সাজ রব৷ একইসাথে ফাগুনের আমেজ, ফুলের মেলা আর প্রিয়জনদের ভালোবাসা।

খুলনায় বসন্ত বরণের সবচেয়ে বড় আয়োজন করা হয়েছে ৩০টি সংগঠনের আয়োজনে বসন্ত উৎসব। আব্বাসউদ্দীন একাডেমীর আয়োজনে মহানগরীর ঐতিহ্যবাহী শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে সকল সংগঠনের সমবেত পরিবেশনা ‘ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল’ গানের মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

আব্বাসউদ্দীন একাডেমী সাধারণ সম্পাদক মো. এনামুল হক বাচ্চু বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের ঋতুভিত্তিক উৎসব ছড়িয়ে দিতে আব্বাসউদ্দীন একাডেমীর খুলনা বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেছে। ৩০টি সংগঠন নাচ-গান- আবৃতিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বসন্তকে বরণ করে নিয়েছে। জনজীবনে বসন্ত বরণের ছোঁয়া আর ভালোবাসার রঙ একাকার হয়ে গেছে এ উৎসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪
এমআরএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।