ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
এলডিসি থেকে উত্তরণের পরও চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পরেও পণ্য রপ্তানিতে ডিউটি-ফ্রি, কোটা-ফ্রি সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। একই সঙ্গে চীন পাটজাত পণ্য আমদানির পাশাপাশি পাটশিল্প এবং চামড়া শিল্প খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানান তিনি।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে ২০২৬ সালে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং কৌশল নির্ধারণে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রেফারেন্সিয়াল ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট (পিটিএ) করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য চীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আহসানুল ইসলাম বলেন, দেশের পাট ও চামড়া উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় একটি খাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই খাতের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পাট ও চামড়া শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ঈদুল আজহার দিন এক কোটির বেশি পশুর চামড়া ছাড়াও সারা বছর প্রচুর পশুর চামড়া সংগৃহীত হয়। যথেষ্ট লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকায় এগুলো দ্রুত প্রসেসিং করা সম্ভব হয় না। যার ফলে নষ্ট হয়ে যায়। চামড়া খাতকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার চামড়াজাত শিল্পের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি চামড়া শিল্পের উন্নয়নে চীন সরকারকে বাংলাদেশকে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানসহ এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, পাট ও পাটজাত পণ্য উৎপাদনে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নতি করে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের ‘বর্ষ পণ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পাট ঐতিহ্যগতভাবেই দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে আছে। পাট থেকে তৈরি সব পণ পরিবেশ বান্ধব ও ব্যবহার উপযোগী।

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, চীনে বাংলাদেশি আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা ছাড়াও মানসম্মত তাজা খাবার, চিংড়ি, কাঁকড়া এবং ঈল মাছের চাহিদা থাকায় এসব পণ্য আরও বেশি রপ্তানি করার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। এছাড়া অন্যান্য কৃষি পণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস রপ্তানিরও আহ্বান জানান।

আহসানুল ইসলাম বলেন, করোনা মহাসংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী পণ্য সরবরাহ ব্যাঘাত ঘটছে। যার ফলে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পৃথিবীর সব দেশ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটা সফল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বাংলাদেশ থেকে আম আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাট শিল্পে অফুরন্ত সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বাংলাদেশ থেকে এ পণ্য আমদানি এবং এ খাতে বিনিয়োগের করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে চীন বাংলাদেশের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে আগ্রহী। এই চুক্তি সম্পাদিত হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
জিসিজি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।